করোনার নতুন রূপ ওমিক্রনের সংক্রমিতের সংখ্যা সারা বিশ্বে প্রচুর পরিমাণে বেরিয়ে আসছে। এই সবের মধ্যে, একটি কথা বারবার শোনা যাচ্ছে যে ওমিক্রন ডেল্টার মতো গুরুতর নয় এবং এর কারণে কেবল হালকা শারীরিক অসুস্থতাই হয়। অনেকে আবার বলছেন ওমিক্রনের সংক্রমণ ঠিক যেন সাধারন জর সর্দি কাশির মতো হয়ে গেছে। কিন্তু সবার
সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক ইন্টারভিউতে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ (Indian Council of Medical Research) এর সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইজরি কমিটি অব দ্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব এপিডেমিওলজি (Scientific Advisory Committee of the National Institute of Epidemiology)- এর চেয়ারপার্সন জয়প্রকাশ মুলিয়িল দাবি করেছেন, একবার যদি কেউ ওমিক্রনে আক্রান্ত হয় তাহলে সেই অ্যান্টিবডি তার শরীরে থেকে যেতে পারে সারা জীবন।
তাঁর মতে, ভারতের জনগণের উপর ওমিক্রণ এর প্রভাব হালকা। প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে এমন মনে করা হচ্ছিল। কেন্দ্র বলেছে যে বর্তমানে দেশের সক্রিয় করোনা রোগীর ক্ষেত্রে মাত্র 5 থেকে 10% কেই হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হচ্ছে। জয়প্রকাশ মুলিয়িল জানিয়েছেন ভারতে দ্বিতীয় ঢেউয়ে এত সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়েছিল যে প্রায় সকলের শরীরে তৈরি হয়েছিল হার্ড ইমিউনিটি। এই কারণেই করোনা তৃতীয় ঢেউ বাকি দেশের মতন ভারতের উপর তেমন মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারেনি। অল্পসংখ্যক মানুষকেই হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন পড়ছে। কারণ পুরোদমে ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ শুরু হবার আগেই দেশের ৮৫ শতাংশ মানুষের কোভিড হয়ে গিয়েছিল। ফলে তাঁদের শরীরে রোগ প্রতিরোধক অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে যায়। জয়প্রকাশ মুলিয়িলের মত অনুযায়ী, টিকার প্রথম যে ডোজটি দেওয়া হয়েছিল সকলকে সেটিই আসলে এই সব আক্রান্ত মানুষের জন্য ছিল বুস্টার ডোজ। কারণ তার আগে থেকেই তাঁদের দেহে কোভিড রোধক অ্যান্টিবডি উপস্থিত ছিল।
একই সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, ওমিক্রন অতি ছড়িয়ে পড়ছে। একে রোখার উপায় জানা নেই। প্রচুর মানুষের ওমিক্রন হবে। বুস্টার ডোজ প্রয়োগ করলেও একে রোখা যাবে না। কিন্তু জয়প্রকাশ মুলিয়িল জানিয়েছেন ওমিক্রনের শক্তি ডেল্টার তুলনায় অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। এখন করোনা নিয়ে আর খুব বেশি ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সাধারণ জ্বর, সর্দি কাশির মত করেই করোনা থেকে যাবে। যাদের শরীরে এই ওমিক্রণ সংক্রমণ ঘটবে, তাঁরা অনেকে বুঝতেও পারবে না।
জয়প্রকাশ মুলিয়িল বলছেন, ষাটোর্ধ্ব যাদের বয়স তাদের যদি শরীরে কোমর্বিডিটি থাকে, টিকার বুস্টার ডোজ নিতে পারেন। কারণ তাঁদের অনেকের ক্ষেত্রেই ভ্যাকসিনের দুটো ডোজ পুরোপুরি প্রতিরোধ ক্ষমতা দেয়নি বলে বলছে সমীক্ষা। কিন্তু সামগ্রিকভাবে সকলের উচিত নিজেদের ইমিউনিটি বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দেওয়া। তাতেই সকলে সুরক্ষিত থাকবেন।