গত নভেম্বর মাসের শেষদিকে দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত হয়েছিল সার্স-কোভ-২-এর নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। কিন্তু করোনাভাইরাস এর এই নতুন প্রজাতি সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়তে এতটুকুও সময় নেয়নি। অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই আগুনের গতিতে সারা পৃথিবীতে ত্রাস সৃষ্টি করে দিয়েছে ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট। শুধু তাই নয় এই নতুন ভেরিয়েন্ট এর হাত ধরেই পৃথিবীতে হানা দিয়েছে করোনার নতুন ঢেউ। আমেরিকা-ব্রিটেনের ইত্যাদি দেশে সংক্রমনের সংখ্যা বিপদসীমার উপরে। ভারতেও দ্রুত ডেল্টা কে সরিয়ে মূল সংক্রামক ভ্যারিয়েন্ট হয়ে উঠছে ওমিক্রন।
কিন্তু কিভাবে এই নতুন শনাক্ত হওয়া ভ্যারিয়েন্ট টি এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে সারা বিশ্বে? অন্য প্রজাতিগুলোর তুলনায় এত দ্রুত সারা বিশ্বের দখল কিভাবে নিচ্ছে ওমিক্রন। জানা গেছে করোনা ভাইরাসের নতুন প্রজাতি ওমিক্রনের ছড়িয়ে পড়ার গতি আগের সব প্রজাতির চেয়ে বেশি এর কারণ আগের প্রজাতিগুলি সংক্রমিত ব্যাক্তির কাশি বা হাঁচির সময় শরীর ড্রপলেট আকারে বেরিয়ে এসে সংক্রমণ ছড়াত। সেই ড্রপলেট অন্য কারো শরীরে প্রবেশ করলে ওপর ব্যাক্তি করোনা সংক্রমিত হত। কিন্তু এখন সামান্য নিঃশ্বাস এর মাধ্যমে একজন থেকে আরেকজনে ছড়িয়ে পড়ছে ওমিক্রন। এক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ওমিক্রন থেকে সকলকে সর্তকতা অবলম্বন করতে বলে এই সম্পর্কে বিষদে জানিয়েছেন।
নিউ এন্ড ইমার্জিং রেসপিরেটরি ভাইরাস থ্রেটস অ্যাডভাইজরি গ্রুপের অধ্যাপক পিটার ওপেনশ জানিয়েছেন ব্রিটেনে প্রায় ৯০ শতাংশ করোনা সংক্রমনের জন্য ওমিক্রন একাই দায়ী। সাথে সাথে এও জানিয়েছেন, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকে ছাড়িয়ে যাবে ওমিক্রন। ডঃ পিটার বিবিসির একটি অনুষ্ঠানে ওমিক্রনকে অত্যন্ত সংক্রামক বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘ ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট টি এত বেশি মাত্রায় সংক্রামক হয়ে উঠেছে যে এটি একজন আক্রান্তের থেকে শুধুমাত্র নিঃশ্বাসের মাধ্যমেই ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং যে কেউ সহজেই এর দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে।’ এমতাবস্থায় সাধারণ মানুষকে আগের চেয়ে আরও সতর্ক হতে হবে।
কিন্তু আশার কথা নানা গবেষণায় উঠে এসেছে ওমিক্রণ সংক্রমণ হালকা উপসর্গ যুক্ত এবং যুক্তরাজ্যের একটি অফিসিয়াল রিপোর্ট অনুযায়ী, এই ভেরিয়েন্ট এ আক্রান্ত ব্যক্তির হাসপাতলে ভর্তি হওয়ার ঝুঁকি অন্যান্য ভ্যারিয়েন্ট এর তুলনায় ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ কম।
প্রসঙ্গত, ভারতে এই যাবৎ Omicron-এর ১৮০০ টিরও বেশি কেস রিপোর্ট করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ওমিক্রন সংক্রমনের খবর এসেছে মহারাষ্ট্র এবং দিল্লি থেকে। জানা গেছে বিদেশ থেকে আগত করোনা আক্রান্ত যাত্রীদের মধ্যে ৮০ শতাংশই ওমিক্রনের ঘটনা। দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন নিজেই সাংবাদিক বৈঠক করে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
Omicron এড়াতে, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা কোভিড ভ্যাকসিনের একটি বুস্টার ডোজ নেওয়ার কথা বলছেন যা এই প্রজাতিকে রুখতে খুবই কার্যকর বলে জানা গেছে।