Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
ট্রেন্ডিং

বিয়ে মানেই রকমারি বিয়ের কার্ড! বাঙালিদের মধ্যে বিয়ের কার্ডের প্রচলন কিভাবে হল জানেন?

আজকাল তো হোয়াটসঅ্যাপেও নিমন্ত্রণপত্র পাঠানোর চল হয়েছে। তবে এখনও কিন্তু কার্ড মারফত নেমন্ত্রণ একেবারে উঠে যায়নি। বরং কার্ডের ভিতর নানা বৈচিত্র এসে বিষয়টিকে আরও রঙিন করেছে। একঘেয়ে বয়ান, একরকমের ডিজাইন সরিয়ে রেখে হবু দম্পতিরা নিত্যনতুন আইডিয়ার দিকে ঝুঁকছেন, যা বিয়ের কার্ডকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলছে।

বিবাহ যেহেতু একটি অন্যতম সামাজিক অনুষ্ঠান তাই এই পর্বের গুরুত্ব অনেক৷ আজকের হাই-টেক যুগের আগে, এমনকী চিঠিপত্রের যুগেরও আগে বহু আগে , প্রায় শ-পাঁচেক বছর আগের কথা। তখন একজন ঘোষক মহল্লায় জানিয়ে দিতেন বিয়ের খবর। যিনি তা শুনতে পেলেন, তিনিই অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত। একেবারে গোড়ায় এভাবেই চলত নিমন্ত্রণ। বহুদিন পর্যন্ত এই রীতি চালু ছিল। পরে তার রূপ বদলায়।

এর পর বরকর্তা বা কন্যাকর্তাকে আমন্ত্রিতের বাড়ি সশরীরে হাজির হয়ে তেল-হলুদ, পান-সুপুরি হাতে দিয়ে বিবাহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার আমন্ত্রণ জানাতে হত৷

বঙ্গদেশে ছাপানো আমন্ত্রণ-পত্রের যুগ সম্ভবত আরম্ভ হয় ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে৷ বাংলায় ছাপাখানার সূচনা অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ ভাগে৷ গোড়ার দিকে শুধু সরকারি কাগজপত্র, ধর্মপুস্তক আর পাঠ্যপুস্তকই ছাপা হত৷ পরে ছাপাখানার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াতে অন্যান্য জিনিস ছাপা আরম্ভ হয়৷ একেবারে গোড়ার দিকে ছাপা বিয়ের নিমন্ত্রণপত্রের চেহারা বা ভাষার বয়ান কেমন ছিল তা জানা যায় না৷ উনিশ শতকের শেষ ভাগের এবং তার পরবর্তী সময়ের কয়েকটি বয়ান দেখলে সে যুগের বিয়ের আমন্ত্রণপত্র সম্পর্কে ধারণা করা যাবে৷

বাগবাজারের বসু পরিবারের নন্দলাল বসু ছিলেন সে যুগের এক জন ধনী ব্যক্তি৷ কিন্ত্ত তিনি তাঁর মধ্যম পুত্র এবং এক কন্যার বিবাহের দিন স্থির করেন প্রায় একই সঙ্গে, এক দিনের তফাতে৷ ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে ছাপা সেই আমন্ত্রণপত্রেই লেখা রয়েছে সে কথা৷ সম্ভবত ব্যয় সঙ্কোচনই এর কারণ, যাতে বিয়ের অনুষ্ঠান ছাড়া অন্যান্য খরচ-খরচা একই সঙ্গে সারা হয়ে যেতে পারে৷

‘শ্রীশ্রী প্রজাপতয়ে নমঃ/ স্মরণার্থ/ আমার মধ্যমপুত্র শ্রীমান বিপিন বিহারী বসুর আয়ুর্বৃদ্ধ্যান্ন / উপলক্ষে জলপান- ১৩ই ফাল্গুন, শুক্রবার/ বিবাহ- ১৭ই ফাল্গুন, মঙ্গলবার/ আমার তৃতীয় কন্যার বিবাহ- ১৮ই ফাল্গুন, বুধবার/ শ্রীনন্দলাল বসু/ ২রা ফাল্গুন, ১২৯৪ সাল/ ৬৫ নং বাগবাজার স্ট্রীট, কলিকাতা৷’ লক্ষণীয়, আমন্ত্রণপত্রের কোথাও ‘আদান-প্রদান’ অর্থাত্‍, কোন পরিবার থেকে কন্যা আনা হচ্ছে বা কোন পরিবারে কন্যা সম্প্রদান করা হচ্ছে তার উল্লেখ নেই, এমনকী নেই পাত্র বা পাত্রীর নামও৷

এমনকী যখন নিমন্ত্রণপত্র চলে এল, তখনও কিন্তু তা হাতে নিয়ে পৌঁছেই দিয়ে আসা হত। সেই সঙ্গে মুখে বলেও দেওয়া হত। অর্থাৎ মুখে বলে নিমন্ত্রণ করাটাই যেন স্বাভাবিক রীতি। তাই পত্রদ্বারা নিমন্ত্রণের ত্রুটিতে মার্জনা চেয়ে নেওয়া হত।

Related posts

সূর্যের পবিত্র পুজো ছট পুজোর দিন অবশ্যই করুন এই কাজটি! মিলবে সুফল, আসবে শ্রীবৃদ্ধি

News Desk

‘বাড়াবাড়ি করলে পরমাণু হামলা করব!’ কেন জাপানকে এরম হুমকি দিল চিন?

News Desk

পৃথিবীর বুকেই নরকের দরজা। অর্ধশত বছর ধরে আগুন নেভেনি যেখানে

News Desk