সঙ্গীর সঙ্গে দারুণ যৌন সম্পর্ক হয়েছে। দুজনেই চরমসুখে বেজায় তৃপ্ত। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই হঠাৎ করে মনটা খারাপ লাগতে শুরু করে দিল। কখনও বিষন্নতা কখনও আবার হতাশা যেন আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরল একজনকে। হয় তো সেই একটা আপনি নিজে। সঙ্গীকে একথা বলতে পারলেন না। ফলে হতাশা আরও বাড়তে শুরু করল। আর আপনার মুড অফ দেখে সঙ্গীও চিন্তায় পড়ে গেলেন।
মুখে অনেকেই স্বীকার করেন না। কিন্তু যৌন সঙ্গমের পর এমন অবস্থা অনেকেরই হয়। মহিলাদের ক্ষেত্রে এই উপসর্গ অনেক বেশি দেখা দেয়। যার প্রভাব অনেক সময় সম্পর্কে পড়তে পারে।
অনেকেই বিষয়টি নিয়ে চিন্তায় থাকেন। অনেকে অতিরিক্ত চিন্তা করে পরবর্তী যৌনতায় অনীহা ডেকে আনেন। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন ‘নো চিন্তা’। সেক্সের পর হতাশা বা বিষন্নতা হওয়াটা একেবারেই স্বাভাবিক লক্ষণ। এর প্রভাব জীবনে পড়তে দেবেন না। এই মানসিক সমস্যা পোশাকী নাম পোস্ট-কয়টাল ডিসফোরিয়া বা পোস্ট কয়টাল ট্রিসটিজ্।
আনন্দের মাঝেও দুঃখ
সেক্সের পরের বিষন্ন দশা আসতে পারে যে কোনও বয়সে। কেউ সম্পর্কে থাকুন বা না থাকুন যৌনতার পর মন খারাপ অনেকেরই হয়। অনেকেরই চোখে জল আসে। সেটা আনন্দে না দুঃখে তা তিনি নিজেও বুঝতে পারেন না। এবং অবাকজনক কথা এই যে, প্রায় প্রতিবারই এই হতাশা বা বিষন্নতার উপসর্গে ডুবে যান তাঁরা।
মন খারাপের কারণ
সেক্স থেরাপিস্ট এবং মনোবিদদের দাবি, এধরনের ঘটনা কোনও রোগ নয়। বরং এটা একেবারেই স্বাভাবিক। এই মন খারাপের অবস্থা ৫ মিনিট থেকে শুরু করে ২ ঘণ্টা পর্যন্ত থাকতে পারে। তার তা নিজে নিজেই ঠিক হয়ে যায়। এতে চিন্তার কোনও কারণ নেই।
আসলে যৌনতার পর শরীর থেকে এনডরফিন, অক্সিটসিন এবং প্রোল্যাক্টিন সহ বিভিন্ন হরমোন নিঃসৃত হয়। এর প্রভাবেই সাময়িক মন খারাপ হয়। অনেকে মনে করেন যে যৌনসুখে তৃপ্ত না হওয়ার কারণেই হয়তো মন খারাপ হচ্ছে। সেটাও ঠিক নয়। আসলে যৌন তৃপ্তি বা অতৃপ্তির সঙ্গে নাকি এই পোস্ট-কয়টাল ডিসফোরিয়ার কোনও সম্পর্ক নেই।
তবে হ্যাঁ, যৌনতার পর অনেক সময়ই বিচ্ছেদের ভাবনা থেকে মন খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এক্ষেত্রে মহিলাদের মধ্যেই বিষন্নতা বা হতাশা বেশি কাজ করে। আবেগপ্রবণ পুরুষের মধ্যেও এধরনের মন খারাপ কাজ করে।
আপনার মন কেন খারাপ হচ্ছে তা একমাত্র আপনিই বুঝবেন। মনে যদি অপরাধবোধ বা কাউকে ঠকানোর আশঙ্কা থেকে থাকে তাহলেও হতাশা বা বিষণ্নতা মনকে গ্রাস করতে পারে। তাই নিজের মনকে নিজে আগে বুঝুন। যখনই মন খারাপ অনেক্ষণ ধরে থেকে যাবে কিংবা ক্রমশ তা বাড়বে তাহলে মনোবিদের সাহায্য নেওয়াটাই ভালো।