সিনেমার চিত্রনাট্য কেও হার মানাবে এই প্রেম কাহিনী। যেখানে প্রেমিকের বয়স আশি, আর প্রেমিকার চুরাশি। উভয়েই শারীরিক অসুস্থতার কারণে ভর্তি ছিলেন একই নার্সিংহোমে। সেখান থেকেই আলাপ, পরিচয় এবং প্রেম। পাশাপাশি বেডে ভর্তি থাকার সময়েই দুজনের মধ্যে তৈরী হয় প্রেমিক প্রেমিকার সম্পর্ক। এরপরেই একদিন হতবাক হসপিটালের সকলে। হঠাতই একদিন প্রেমিকাকে নিয়ে পগারপার বৃদ্ধ। অতঃপর….
প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে বাংলা সংবাদ মাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনে। ঘটনাটি অস্ট্রেলিয়ার (Australia) পার্থ (Perth) শহরের। সেখানকার ই একটি নার্সিং হোম এর পাশাপাশি বেডে চিকিৎসা চলছিল দুই প্রবীণের। বৃদ্ধ ব্যাক্তির নাম রালফ গিবস। বৃদ্ধা মহিলার নাম ক্যারল লিসলে। জানা গেছে ওই বৃদ্ধা ডিমেনশিয়া ও পারকিনসনে ভুগছেন। কিন্তু ডাক্তার নার্স সকলের চোখে ধুলো দিয়ে ক্যারলকে নিয়ে গত ৪ জানুয়ারি সকালবেলা কোনো উপায়ে একটি গাড়ি ম্যানেজ করে নার্সিংহোম থেকে উধাও হয়ে যান রালফ। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি জানতে পেরে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ যতক্ষণে তাদের খোঁজে নামে এই যুগল পৌঁছে গিয়েছিলেন ৪৮০০ কিলোমিটার দূরে প্রায় কুইন্সল্যান্ডের কাছে। অবশেষে পুলিশ আটকে তাদের।
রালফ জানিয়েছেন, তাঁরা কুইন্সল্যান্ডে ক্যারলের বাড়ি যাচ্ছিলেন। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, ক্যারল পথেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। উভয়কে যখন উদ্ধার করা হয় তখন ধুঁকছিলেন ক্যারল। প্রশাসন হেলিকপ্টারে করে রালফ ও ক্যারলকে পারথের ওই নার্সিংহোমে ফিরিয়ে আনে শেষ পর্যন্ত। না, রালফ-ক্যারলের প্রেম কাহিনি এখানেই শেষ হয়নি। কারণ আদালত পর্যন্ত ঘটনাটি গড়িয়েছে।
যেহেতু রালফের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা করে। এফআইআরে বলা হয়, রালফ যা করেছেন, জীবনসংশয় হতে পারত ক্যারলের তাতে করে। যদিও আদালতে রালফের উত্তর ছিল, ”আমি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছিলাম ক্যারলকে। সামান্য প্রেম করছিলাম সেই সঙ্গে।” তার জবাব শুনে প্রেমিক রালফকে বিচারক বকা দেন। বলেন, ” মৃত্যু হতে পারত ক্যারলের আপনার প্রেমের জন্যে। আপনি খুব বিপজ্জনক কাজ করেছেন।”
কেবল বকাঝকা করেই আশি বছরের প্রেমিককে ছেড়ে দেওয়া হয়নি। রালফের ৭ মাসের জেল হয়েছে। দোষীর অসুস্থতা ও বয়সের কারণে যদিও এখনই তা কার্যকর হয়নি বলেই জানা গিয়েছে। অন্যদিকে রালফ-ক্যারলের প্রেম-কাহিনি সুপারহিট হয়েছে গোটা বিশ্বের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে। অনেকেই বলছেন, সিনেমার চেয়েও এই ঘটনা বেশি!