দিল্লির যমুনা খাদর এলাকায় আট বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণ ও নৃশংসভাবে হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনার মামলার সমাধান করতে গিয়ে অভিযুক্ত এক ব্যাক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসলে, মেয়েটি একদিন অভিযুক্তকে তার মায়ের সাথে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেছিল যার সাথে মহিলার অবৈধ সম্পর্ক ছিল।
ডিসিপি (সেন্ট্রাল) শ্বেতা চৌহান জানান, রিজওয়ান ওরফে বাদশা, পেশায় একজন কসাই। সে ধর্ষণের পর নাবালিকা মেয়েটির গলা কেটে ফেলে এবং পরিচয় গোপন করতে তার মুখ বিকৃত করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার রিজওয়ানকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পর সে তার অপরাধ স্বীকার করে।
ডিসিপি বলেন, ৫ আগস্ট সকালে আমরা একটি ফোন পাই, যেখানে একটি মেয়ে শিশুকে বাড়ি থেকে অপহরণ করা হয়েছে বলে জানানো হয়। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও মেয়েটিকে পাওয়া যায়নি। ১৮ তারিখে একটি মেয়ে শিশুর লাশ পাওয়া যায়, যা তার আত্মীয়রা তাদের মেয়ে বলে শনাক্ত করে।
প্রায় ২০০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল
এই মামলার তদন্তের সময়, পুলিশ এক সূত্র থেকে জানতে পারে যে রিজওয়ান নামক বছর পঁয়ত্রিশের একজন ব্যক্তি, যে কিনা প্রায়ই মেয়েটির বাড়িতে যেতেন। তিনি বলেন, ঘটনার পর দিল্লি পুলিশ অভিযুক্তকে ধরতে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চালায়। আশেপাশের সব সিসিটিভি ক্যামেরা চেক করা হলেও কোনো ক্লু পাওয়া যায়নি। অভিযুক্তকে খুঁজে বের করার জন্য যমুনা খাদার এলাকায় বসবাসকারী প্রায় ২০০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার রিজওয়ান ওরফে বাদশাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের পর সে তার অপরাধ স্বীকার করে।
অভিযুক্ত রিজওয়ান মাদকাসক্ত
অভিযুক্ত রিজওয়ান ওরফে বাদশা ২০ বছর আগে কাজের সূত্রে দিল্লিতে এসে রাজধানীর তুর্কমান গেট এলাকায় কসাইয়ের কাজ শুরু করে। জেরায় তিনি আরও জানান যে তিনি মাদকাসক্ত এবং অবিবাহিত এবং তিনি যমুনা খদ্দরে নেশা করার জন্য যেতেন। তিনি পুলিশকে জানান যে সেখানে তিনি নিহত শিশুটির মায়ের সাথে পরিচিত হন এবং তাদের দুজনের মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক ছিল এবং তিনি ভিকটিমের সাথে বন্ধুত্বও করেছিলেন। তিনি আরও জানান যে বাচ্চাটি তাকে তার মায়ের সাথে আপত্তিকর ভাবে দেখেছিল এবং তাই সে তাকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ঘুমন্ত অবস্থায় বাড়ি থেকে অপহরণ:
অভিযুক্ত রিজওয়ান আরও জানান, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় তিনি এলাকায় পৌঁছে গাঁজা সেবন ও মদ পান করেন এবং নিহতের পরিবারের সকল সদস্যদের ঘুমানোর জন্য রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। বস্তিতে পৌঁছে তিনি দেখেন, বাচ্চা মেয়েটি তার পরিবারের সঙ্গে বস্তির ভেতরে ঘুমাচ্ছে। এরপর তাকে অপহরণ করে যমুনা খদ্দরের কাছে বনাঞ্চলের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। তারপর তার গলা কেটে তার মুখ বিকৃত করে।
বর্তমান মামলায় অভিযুক্ত রিজওয়ানকে ২২ আগস্ট গ্রেফতার করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। আসামিকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। অপরাধের অস্ত্র অর্থাৎ ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্ত রিজওয়ান পেশায় একজন কসাই। তার চার ভাই আছে এবং তার বাবা-মা বিহারে থাকেন। ডিসিপি জানিয়েছেন, এই হত্যাকাণ্ডে মেয়েটির মায়ের কোনও ভূমিকাই সামনে আসেনি।