বয়স মাত্র ৭। কিন্তু হলে কি হবে, এইটুকু বাচ্চা মেয়ের উপস্থিত বুদ্ধি দেখলে অবাক হতে হয়। চোখের সামনে বন্দুকধারী দুষ্কৃতীদের দেখেও ভয় পেয়ে যায় নি। উল্টে বুদ্ধি খাটিয়ে দুষ্কৃতীদের হাত থেকে নিজের মা কে বাঁচালো ছোট্ট সাত বছরের অবনী। জানুন কিভাবে।
উত্তরপ্রদেশের আগ্রার কাছেই বাস করেন অবনী নামের এই ছোট্ট মেয়েটি। আর বন্দুকধারী ডাকাতদের প্রতিরোধ করার মত সাহস রাখে ৭ বছরের মেয়ে অবনী। অবনীর মা রেখাকে ঘিরে ধরেছিল কয়েকজন সশস্ত্র দুষ্কৃতী। অবনী যখন তার মা রেখাকে দুষ্কৃতীদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করতে দেখে সে বাড়ি থেকে দৌড়ে বেরিয়ে যায়। এবং বাইরে গিয়ে হট্টগোল সৃষ্টি করে যাতে ঘটনাস্থলে লোকজন জড়ো হয় এবং এইভাবে তার মায়ের জীবন রক্ষা পায়। অবশ্য পালিয়ে যাওয়ার আগে ডাকাতরা অবনীর মা রেখার মাথায় পিস্তলের বাট দিয়ে পরপর পাঁচটি আঘাত করে, এতে তার রক্তক্ষরণ হয়।
তবে যত সহজে মনে হচ্ছে তত সহজে অবনী হট্টগোল সৃষ্টি করতে পারেনি। বাচ্চা মেয়েটি সাহায্যের জন্য বাড়ির বাইরে বেরোতে গেলে ডাকাত তার পিছু করে তাকে ধরার জন্য। কিন্তু এটুকু মেয়ে সাহস হারায়নি। সে বুদ্ধি খাটিয়ে ডাকাতদের চোখে ধুলো দিয়ে লুকিয়ে পড়ে। ডাকাতরা তাকে খুঁজে না পেয়ে ফিরে যেতেই অবনী দৌড়ে তার বাবার এক বড় দাদার বাড়িতে গিয়ে বেল বাজিয়ে হট্টগোল করে। অবনীর সাহায্য পার্থনা শুনে তারা ছুটে যায় ঘটনাস্থলে। কিন্তু ততক্ষণে অবনীর মা রেখার পার্স ও চেইন ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় ডাকাতরা। এ সময় অবনীর মা রেখারও ডাকাতদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এই ঘটনা সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে।
এই পুরো ঘটনাটি ১২ই এপ্রিল দুপুর ২টো ৫০ মিনিটে আগ্রার ব্রজ বিহার কলোনিতে একটি নির্মীয়মান বাড়িতে ঘটেছে। এই বাড়িতেই গৃহবধূ রেখা তার দুই মেয়ে, ৭ বছরের অবনী এবং ৩ বছরের মেয়ে শ্রাব্যাকে নিয়ে থাকেন। রেখার স্বামী উরভেশ কুমার একজন বিএসএফ জওয়ান এবং বর্তমানে বিকানেরে কর্মরত আছেন
উরভেশ কুমারের এই বাড়ির পিছনেই মেয়েটির জেঠু বিজেন্দ্র সিং সোলাঙ্কির বাড়ী, যিনি উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর পদে কর্মরত। যেই বাড়িতে ঘটনার সময় অবনী দৌড়ে সাহায্য চাইতে গিয়েছিল। বিজেন্দর সিং সোলাঙ্কি বর্তমানে ইটাওয়াতে পোস্টিং রয়েছেন। উরভেশের বাবা রাজেন্দ্র সিং সোলাঙ্কিও সিআরপিএফে রয়েছেন। উরভেশের পরিবার মূলত কাসগঞ্জ জেলার বাসিন্দা। ঘটনার বিষয়ে উরভেশ বলেন, নান্দু (অবনির ডাক নাম) না থাকলে বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত। পাড়া-প্রতিবেশী থেকে পুরো পরিবার এইটুকু বাচ্চা মেয়ের সাহসিকতা এবং উপস্থিত বুদ্ধির প্রশংসা করছে।
এই ঘটনার ক্ষেত্রে, পুলিশ আইপিসির 394 ধারায় তিন অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। তিন দুর্বৃত্তই পুলিশের ওয়ান্টেড লিস্টে রয়েছে। পুলিশের একটি বিশেষ দল দুষ্কৃতীদের খোঁজে নিয়োজিত রয়েছে। আগ্রা এবং পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতেও দুষ্কৃতীদের ছবি সহ খোঁজ চলছে।