টোকিও অলিম্পিক্সে জ্যাভলিন দেশকে সোনা এনে দিয়েছে । কিন্তু এত উৎসব, আনন্দ, আতসবাজিতেও ১২ বছরের সৌরদীপ বেরার জ্যাভলিন-আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না। তার মাথায় গেঁথে গিয়েছিল জ্যাভলিনের ফলা এক বছর আগে। বুধবার কলকাতার এসএসকেওএম হাসপাতালের বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সে তৃতীয় বার অস্ত্রোপচার করা হল তার সেই ক্ষত সারাতে
। হাওড়ার নাউদা নারায়ণচন্দ্র বিদ্যাপীঠের ছাত্র সৌরদীপের ক্রেনিওপ্লাস্টি করে টাইটেনিয়ামের কৃত্রিম খুলি বসানো হল।
২০২০ সালের ১৩ই জানুয়ারি সেই একদিন। সৌরদীপ বেরা স্কুলের খেলার মাঠের পাশেই বসেছিল। হাওড়ার শ্য়ামপুুরে বাড়ি । তার মাথায় আচমকাই কারোর ছোঁড়া জ্যাভলিন এসে গেঁথে যায়। জ্যাভলিনটি খুলির মধ্যে গর্ত করে ঢুকে যায়। এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে এদিকে গেঁথে যাওয়া জ্যাভলিন সহ সৌরদীপকে নিয়ে যাওয়া হয়। জ্যাভলিনটিকে সেখানেই তাৎক্ষনিক অস্ত্রোপচারের পর বের করা হয়। কিন্তু ১২ বছরের সৌরদীপের মাথায় গভীর ক্ষত তৈরি হয়ে যায় । এরপর তার মাথায় অপারেশনও করা হয়েছিল। কিন্তু পুরোপুরি সেরে ওঠেনি মাথার ক্ষতর জায়গাটি। তাছাড়া জায়গাটি এতটাই নরম ও সংবেদনশীল হয়েছিল যে সৌরদীপের অল্প আঘাতেই আবার বড়সর সমস্যা হতে পারত। অবশেষে স্থায়ীভাবে এসএসকেএম হাসপাতালের বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সেই ক্ষত মেরামতির উদ্যোগ নিলেন।
সৌরদীপের মাথায় নকল খুলি বসানোর উদ্যোগ নেন চিকিৎসকরা। ছাত্রের মাথার ওই অংশে নকল খুলি বসানো হয়েছে অপারেশন করে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, টাইটেনিয়ামের তৈরি মেস বা জাল যে অংশে খুলিটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সেখানে বসানো হয়েছে ক্রেনিওপ্লাস্টির মাধ্যমে। এই কৃত্রিম খুলি জ্যাভলিনের আঘাতে খুলির যে হাড় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সেই অংশটিকেও রক্ষা করবে। তবে এখনও পঙ্গু হয়ে রয়েছে শরীরের বাঁদিক।
বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সের সার্জারি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক শুভাশিস ঘোষ জানিয়েছেন, দুর্বল ও সংবেদনশীল হয়ে রয়েছে মাথার ওই অংশে। এখন ওর মস্তিস্কের ক্ষতি করতে পারে ওই জায়গায় যে কোনও আঘাত। সেজন্য ওই অংশে কৃত্রিম খুলি বসানো হল অপারেশন করে। যাতে ওই জায়গায় আঘাত লাগলেও মস্তিস্কের ভিতরের ক্ষতি না হয় পরবর্তীকালে।