২০২০ সালের ২৫শে মে মিনেয়াপোলিসের রাস্তায় আফ্রিকান-আমেরিকান নাগরিক জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনার ভয়াবহতায় কেপে ওঠে সারা বিশ্ব। সামনে আসে এখনও পৃথিবীর বুকে চলা বর্ণ বিদ্বেষের মত নৃশংস ঘটনার। সারা পৃথিবীতে শুরু হয় ব্ল্যাক লাইভ মাটার (Black Lives Matter) মতন প্রতিবাদ।
সম্প্রতি সেই ঘনটনার বিচারে মার্কিন পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক শভিনকে জর্জ ফ্লয়েড হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করলো মার্কিন আদালত।
প্রসঙ্গত গত বছরে মিনেয়াপোলিসের একটি সিগারেটের দোকান থেকে এক প্যাকেট সিগারেট কিনেছিলেন ৪৬ বছর বয়সী জর্জ ফ্লয়েড। দোকানদারের সন্দেহ হয় যে সম্ভবত জর্জ ২০ ডলার মূল্যের একটি ভুয়ো বিল ব্যবহার করছিলেন এবং জর্জ ফ্লয়েড যখন সিগারেটের প্যাকেটটি ফেরত দিতে অস্বীকার করেন তখন তিনি পুলিশ ডাকেন।
পুলিশ পৌঁছানোর জর্জ ফ্লয়েড কে পুলিশের গাড়িতে তোলার সময় মি. ফ্লয়েড প্রতিবাদ করতে গেলে ধ্বস্তাধস্তি হয়। পুলিশ অফিসার শভিন তাকে জোর করে মাটিতে ফেলে তার হাঁটু ফ্লয়েডের পিছনের ঘাড়ের চেপে ধরে বসে থাকে। এসময় ফ্লয়েড বহুবার আর্জি জানিয়েছিলেন যে ,তিনি শ্বাস নিতে পারছেন না। ফ্লয়েড বার বার বলছিলেন, “দয়া করুন, দয়া করুন, দয়া করুন”।
যখন অ্যাম্বুলেন্স এসে পৌঁছায় ততক্ষণে মি. ফ্লয়েড মারা যান। এই গোটা ঘটনাটি একটি ভিডিওতে ধরা পড়ে।
এই ঘটনায় বিশ্বজুড়ে পুলিশের প্রয়োজনাতিরিক্ত বলপ্রয়োগ ও বর্ণ বৈষম্যের-এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে বিশ্বজুড়ে।
৪৫ বছর বয়সী পুলিশ অফিসার ডেরেক শভিন কে মূলত তিনটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়: যথাক্রমে তা হলো সেকেন্ড ডিগ্রি মার্ডার, থার্ড ডিগ্রি মার্ডার এবং নরহত্যা।
চূড়ান্ত সাজা ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত তিনি পুলিশি হেফাজতে থাকবেন। মনে করা হচ্ছে সাজা হিসেবে কয়েক দশক পর্যন্ত জেল খাটতে হতে পারে তাকে।
রায় ঘোষণার পর ফ্লয়েড পরিবারের আইনজীবী বেন ক্রাম্প বলেন, এই রায় যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার মতো একটি রায়। এক টুইটে বেন লেখেন, “কষ্ট দিয়ে পাওয়া ন্যায়বিচার অবশেষে এলো।”
রায় ঘোষণার কিছুক্ষনের মধ্যেই ফ্লয়েড পরিবারকে টেলিফোনে যোগাযোগ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিস।
টেলিভিশনে দেয়া জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে মি. বাইডেন বলেন: “পদ্ধতিগত বর্ণবাদ পুরো জাতীয় আত্মার উপর একটি কলঙ্ক। “