টানটান উত্তেজনা দিনভর। লড়াই হাড্ডাহাড্ডি। এযেন ঠিক যেন সাপলুডোর খেলা। একবার এগোচ্ছেন শুভেন্দু তো পরের রাউন্ডেই মমতা। দিনভর ঠিক এমনটাই চললো হাইভোল্টেজ কেন্দ্র নন্দীগ্রামে! কিন্তু সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষ অবধি শুভেন্দু অধিকারী পূর্ব মেদিনীপুরের এই কেন্দ্রে শেষ হাসি হাসলেন । ব্যবধান মোটে ১,৯৫৬। নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে জিতলেও আর কোথাও বিজেপিকে তিনি বিশেষ সুবিধা করে দিতে পারলেন না। সবুজ ঝড় সত্ত্বেও বাংলায় বিজেপির দখলে এলো বেশ কিছু জেলা।
বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী গণনার শুরু থেকেই একটানা এগিয়ে ছিলেন। বেলা গড়াতেই স্কোরবোর্ড ঘুরতে থাকে। এগিয়ে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গণনা পৌঁছয় শেষ রাউন্ডে টানটান উত্তেজনায়। খবর ছড়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১,২০০ ভোটে জিতে গিয়েছেন। সেই তথ্য নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। কিন্তু সময় এগোতেই গণনাকেন্দ্র থেকে খবর আসে ভোটে জিতে গিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। এর পরই বাঁধে বিপত্তি।
তৃণমূলের তরফে অভিযোগ করা হয়, গণনায় কারচুপি করা হয়েছে। কারণ, শেষ রাউন্ডের গণনায় অনেকটাই এগিয়ে ছিলেন তৃণমূল নেত্রী। গণনার মাঝে ঝড়-জলে হলদিয়ার ওই কেন্দ্রে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয় । কাজ করছিল না কিছুক্ষণ সার্ভারও । এর পরই গণনাকেন্দ্র থেকে ঘোষণা করা হয় বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী নন্দীগ্রামে জিতে গিয়েছেন । স্বাভাবিকভাবেই এই হার মেনে নিতে পারেন নি মমতা বন্দোপাধ্যায়। এর পিছনে কারচুপি রয়েছে বলে দাবি তৃণমূলের। এমনকী, এই কারচুপির হদিশ পেতে তৃণমূল সুপ্রিমো আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন । এদিকে রেজাল্টের ফাইনাল শিটে স্বাক্ষর করবেন না বলে জানিয়ে দেন তৃণমূল এজেন্ট। ফলে টানাপোড়েন শুরু হয় এই কেন্দ্রের ফল ঘোষণা নিয়ে । তৃণমূল নেতৃত্ব পুনর্গণনার দাবি জানায় ।
তৃণমূলের তরফে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম-সহ মোট পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনে যান। এমনকী, দাবি জানিয়ে চিঠিও দেন পুনর্গণনার । ইতিমধ্যে, শুভেন্দু শংসাপত্র নিতে হলদিয়ার গণনাকেন্দ্র আসেন । তাঁর গাড়ি ঘিরে চলে বিক্ষোভ। ছোঁড়া হয় ইট। শুভেন্দু বাহিনীর সাহায্য নিয়ে কেন্দ্র ছাড়েন । পরে অবশ্য কমিশন পুনর্গণনার দাবি খারিজ করে । কমিশনের সঙ্গে সহমত হন রিটার্নিং অফিসারও। ‘সুপার ওভারে’ শুভেন্দু শেষপর্যন্ত ১,৯৫৬ ভোটে জয় পান।