আজ, চিকিৎসা বিজ্ঞানের কারণে, প্রায় সবকিছুই সম্ভব বলে মনে হচ্ছে। এমনকি একজন নারী পুরুষ হতে পারে এবং একজন পুরুষকে নারীতে রূপান্তরিত করা যায়। এটি একটি প্রক্রিয়া। আমেরিকা থেকে এমন একজন মহিলার কথা সামনে এসেছে যিনি প্রথমে একজন পুরুষ হতে চেয়েছিলেন। যার জন্য তিনি অস্ত্রোপচারও করেছিলেন। বেশ কয়েকটি অস্ত্রোপচারের পর, এবং সাথে কয়েক বছর ধৈর্য্যের পড় তিনি একজন পুরুষ হয়েছেন। কিন্তু এখন সে আবার নারী হতে চায়। আজ আমরা আপনাকে এই মহিলার গল্প বলতে যাচ্ছি, কেন তিনি এত কঠিন সিদ্ধান্ত নিলেন এবং কীভাবে তিনি সমস্যার মুখোমুখি হলেন এবং এখন তার পরিকল্পনা কী।
ওই নারীর নাম আলিয়া ইসমাইল (Alia Ismail)। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানের বাসিন্দা। ছয় বছরের কঠিন প্রক্রিয়ার পরে, তিনি একজন মহিলা থেকে একজন পুরুষ হয়েছিলেন। কিন্তু এখন তিনি আবার নারী হতে চায়। তিনি এটি করতে যাচ্ছেন কারণ তিনি মনে করেন যে তার নতুন পরিচয় তার সাথে ন্যায়বিচার করছে না এবং তার ব্যক্তিত্বকে সম্পূর্ণরূপে উন্মোচন করতে সক্ষম হচ্ছে না।
আলিয়া ১৮ বছর বয়সে বুঝতে পেরেছিলেন যে তিনি তার নারী শরীরে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন না। তিনি তখন একজন পুরুষের মতো জীবনযাপন করতে শুরু করেন, তাদের মতো পোশাক পড়া, আদব কায়দা ইত্যাদি। ২০ বছর বয়সে, তিনি চিকিৎসার সাহায্যে তার শরীরে পরিবর্তন করতে শুরু করেন। তিনি হরমোন গ্রহণ করতে শুরু করেছিলেন যাতে তার শরীরে টেস্টোস্টেরন (পুরুষদের শরীরে উৎপাদিত যৌন হরমোন) এর মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
২৭ বছর বয়সে, তিনি আইনত ভাবে তার নাম পরিবর্তন করেছিলেন। তিনি তার নাম পরিবর্তন করে ঈসা রাখেন। ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে, তিনি আবার একটি ডাবল সার্জারি করেন। এরপর দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সে রূপান্তরকামী পুরুষ হয়ে ওঠে। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই সে বুঝতে পারল পুরুষ শরীরে সে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে না।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে, তিনি সম্পূর্ণরূপে পুরুষ হরমোন গ্রহণ বন্ধ করে দেন। এখন তিনি আবার তার পুরানো পরিচয়ে ফিরে যেতে বদ্ধপরিকর। অর্থাৎ, এখন তিনি একজন পুরুষ থেকে আবার নারী হতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তিনি বলেন, ‘আমি যখন প্রথমবার আমার পরিবারের সামনে সমকামী হিসেবে আসি, তখন তাদের পক্ষেও এটা মেনে নেওয়া সহজ ছিল না। যদিও মা আমার অনুভূতি বুঝতেন।
তিনি বলেন, ‘এটি আমার জীবনের এক ধরনের শিক্ষার সময় ছিল। এর মাধ্যমেই আমি নিজেকে চিনি। আমার অনুভূতির সময় আমার পরিবার নিরপেক্ষ ছিল। তারা জানতো আমি জীবনের অজানা পথে হাঁটতে সক্ষম। এবং তারা আমার সত্যের জন্য গর্বিত। এখন আমি হরমোন নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। আমি কিছু করার পরিকল্পনা করি না। তবে আমি জানি যে ভবিষ্যতে অনেক কিছু পরিবর্তন হবে।
আলিয়া বলেছেন যে অনেকেই তার সাথে তাদের লিঙ্গ পরিবর্তন এবং লিঙ্গ পরিচয় সম্পর্কিত সমস্যাগুলি ভাগ করে নেন। তিনি এই বিষয়ে তার মতামত দিতে দ্বিধা বোধ করেন না। তিনি বিশ্বাস করেন যে একজনের নিজের উপর বিশ্বাস করা উচিত, জীবনের অনেক কঠিন পথ কেবল এই একটি উপায় থেকেই সহজ হয়ে যায়।