ভিন রাজ্যের জনৈকার সাথে পরিচয় বাংলার যুবকের। কিন্তু সেই পরিচয়ের ধাক্কা সামলাতে যে এইভাবে হবে তা দুঃস্বপ্ন -এও কল্পনা করেনি যুবক। বর্তমান যুগ ইন্টারনেট সর্বস্ব যুগ। এখন অনলাইনে উপলব্ধ ডেটিং সাইট থেকে ম্যাট্রিমনি সাইট। এছাড়াও নানা সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে আলাপের পর বন্ধুত্ব থেকে প্রেম হয় অনেকের মধ্যেই। তেমনি ফেসবুকে একটি প্রোফাইলে চোখ আটকে গেছিল এই ছেলেটির। মেঘের মত ঘন লম্বা চুল। প্রথম দর্শনেই মনে ধরে যায়। ফ্রেন্ডশিপ রিকুয়েস্ট আদান প্রদানের পদ্ধতি শুরু হয় বন্ধুত্ব।
এভাবেই ওড়িশার ভদ্রক জেলায় বসবাসকারী মেঘনা মণ্ডলের সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগনার অলোক কুমার মিস্ত্রির। মেসেঞ্জারে কথা বলে পরিচয়, কিন্তু মাত্র ২ সপ্তাহের ব্যবধানেই সেই পরিচয় পাল্টে যায় প্রেমে। প্রেমে অন্ধ হয়ে ১৫ দিনেই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তারা। অলোকের বাড়ির লোকও এই বিয়ের সিদ্ধান্তে আপত্তি করেনি।
মেঘনা মণ্ডলের বাড়ী ওড়িশার কেন্দ্ররাপাড়া জেলার জাম্বু মেরিন থানা এলাকার রামনগর গ্রামে ৷ তার বাবা হলেন বিশ্বনাথ মণ্ডল। মেঘনা কে বিয়ে করতে তাই ওড়িশার জাজপুর জেলায় চান্দিখোলে পরিবার নিয়ে আসেন অলোক৷ মেঘনা মণ্ডলও তার পরিবারের লোক নিয়ে আসেন৷ অলোকের মামার বাড়ি বাসুদেবপুরের কাসিয়ায়৷ দুই পরিবারের সম্মতিক্রমে সেখানেই বিয়ে হয় অলোক ও মেঘনা৷ বিয়ের পর সন্ধ্যা বেলার দিকে আশেপাশের লোকের জন্য একটি প্রীতি ভোজের আয়োজন করা হয়।
সেই অনুষ্ঠানেই ঘটে এমন ঘটনা যাতে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। এক মহিলা নবদম্পতিকে শুভেচ্ছা জানানোর সময় আচমকাই ‘মেঘনা’ কে ‘মেঘনাদ’ বলে ডেকে ওঠে। এই কথা শুনে অবাক হয় অলোক ও তার পরিবারের লোকেরা। মহিলাকে চেপে ধরলে তিনি চাপের মুখে স্বীকার করে নেন মেঘনা কোনো যুবতী নয়, সে একজন পুরুষ। নাম মেঘনাদ, সম্পর্কে তার ভাইপো এবং পরিচিত।
এরপরেই অলোকের পরিবার ও উপস্থিত স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তার মাথার চুল কেটে দেয় এমনকি তার শাড়ী ও খোলা হয়। পুলিশ এই ঘটনার বিষয়ে জানতে পেরে এসে মারমুখী জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে মেঘনাদ ও তাঁর পরিবারকে।