স্বপ্ন ছিল রুপোলি পর্দার বড় নায়িকা হওয়ার। গ্ল্যাম জগতের হাতছানিতেই দিদির সাথে বাড়ি থেকে বলি জগতের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ে দুই বোন। আর তিন বোনের হঠাৎ করে এই ভাবে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর থেকেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে শিলিগুড়ির ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের ভক্তিনগর পাইপলাইন এলাকায়। নিখোঁজ হওয়ার মিসিং ডায়েরি পেয়ে তদন্তে নেমে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিন নাবালিকাকে উদ্ধার করল এনজেপি থানার পুলিশ। এরপরই কেন তারা এইভাবে বাড়িতে কাউকে না জানিয়ে ঘর ছাড়ল এই বিষয়ে নাবালিকা বোনদের জিজ্ঞাসাবাদ করতেই সামনে উঠে এল এক মারাত্মক এক চক্রান্তের হদিশ। এই সময় ডিজিটালে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়ে ওই দুই বোন জানায় নায়িকা হওয়ার আশা নিয়েই বাড়ী থেকে বেরিয়ে পড়েছিল তারা। পুলিশের সূত্র অনুযায়ী গৃহত্যাগী এই ৩ নাবালিকার মধ্যে সকলেই শিলিগুড়ির স্কুলে পরে। এর মধ্যে দুই বোন ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ে ও আর একজন পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে। সম্পর্কে তাঁরা তিন বোন। কয়েকদিন আগে এক ছাত্রীর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিচিত হয় দিল্লির বাসিন্দা এক তরুণের সঙ্গে। ফোনে তাদের আলাপ পরিচয় বাড়লে সেই তরুণ তাকে বলে কলকাতা আসতে। সেখান থেকে ওই তরুণ তাকে দিল্লি নিয়ে যাবে। দিদি নায়িকা হতে দিল্লী যাচ্ছে জানতে পেরে আরও দুই বোন দিল্লী যেতে চায়। তাঁদের স্বপ্ন ছিল রুপোলি জগতের নায়িকা হওয়ার। এরপর তিন বোন মিলে এক ফন্দি আঁটে। করে সোমবার টিউশন পড়তে যাওয়ার অছিলায় বাড়ি থেকে বের হয়ে তিনজন শিলিগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ি যায়। সেখান থেকে কলকাতাগামী বাস ধরে আসে কলকাতা।
সোমবার দুপুরে এই তিন স্কুল ছাত্রীর নিখোঁজের অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে নিউ জলপাইগুড়ি থানার পুলিশ। খোঁজ খবর করে পুলিশ জানতে পারে তিন বোন জলপাইগুড়ির থেকে কলকাতায় আসার বাসে উঠেছে। এরপর রাতে কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের উদ্ধার করা হয়। তাঁরা নায়িকা হওয়ার ইচ্ছাপূরণ করতেই দিল্লি যাচ্ছিল বলে পুলিশকে জানায়। পুলিশের সন্দেহ দিল্লির দিল্লী নিবাসী সেই তরুণ তিন বোনকে নায়িকা হওয়ার টোপ দেখিয়ে নারী পাচারের ছক করেছিল।
এই ঘটনার পর দার্জিলিং জেলা লিগ্যাল অ্যাইড ফোরামের কর্মকর্তা অমিত সরকার জানান, শিলিগুড়ি সহ উত্তর বঙ্গের বেশ কিছু এলাকায় এভাবে স্কুল ছাত্রী, অল্প বয়সী মেয়েদের নানাধরনের প্রলোভন দেখিয়ে ছক কষে তাঁদের নানা রাজ্যে নিয়ে গিয়ে পাচার করে দেওয়া হয়। অথচ দুনিয়া সম্পর্কে বাস্তব জ্ঞান না থাকা নাবালিকার বুঝতে পারে না তাদের কি মারাত্মক ফাঁদে ফেলা হচ্ছে। ফলে এবিষয়ে তাদের অভিভাবকদের বেশ সতর্ক থাকতে হবে। সম্প্রতি নায়িকা হওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অনেককে এইভাবে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশ তদন্ত সম্পূর্ন হলে দোষীদের নাম সামনে আসবে।