বিছানায় পড়ে আছে মোবাইল ফোন। দু কানে তখনও গোঁজা হেডফোন। তাতে গান চলছিল না অন্যকিছু তা জানা যায়নি। ঠিক এই অবস্থাতেই সিলিং থেকে ঝুলে রয়েছে গৃহবধূর প্রাণহীন দেহ। ভয়াবহ এই দৃশ্য দেখে কার্যত স্তম্ভিত পরিবার ও প্রতিবেশীরা। গলায় ফাঁস লাগিয়ে অস্বাভাবিক ভাবে মারা গেলেন সেই গৃহবধূ। দাসপুর থানার অন্তর্গত সাহাপুরের তীর্থপতি সামন্তের স্ত্রী মৌসুমী সামন্তের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দাসপুর থানার সাহাপুর এলাকায়।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ। মৌসুমীর স্বামী বাড়িতে থাকতেন না, কাজের সূত্রে ভিন রাজ্যে বাস করতেন তিনি। বাড়িতে পাঁচ বছরের মেয়েকে নিয়ে থাকতো মৌসুমী। জানা গেছে বৃহস্পতিবার দুপুরে অনেকক্ষণ মাকে দেখতে না পেয়ে কান্নাকাটি শুরু করে বাচ্চা মেয়েটি। তার ক্রমাগত কান্নার আওয়াজ কানে যায় প্রতিবেশীদের। বিষয়টি অস্বাভাবিক লাগলে তারা খোঁজ নিতে এসে দেখেন মৌসুমীর শোওয়ার ঘর বন্ধ। ধাক্কাধাক্কি করে সাড়া না পেয়ে জোর করে দরজা খুলে ঘরে ঢুকতেই চোখে পড়ে মৌসুমীর ঝুলন্ত দেহ। এমন দৃশ্য দেখে কার্যত বাক্যহারা হয়ে যান তারা।
প্রতিবেশীরা দেখেন ওই গৃহবধূর কানে তখনও হেডফোন গোঁজা। বাচ্চা মেয়েটিকে ঘর থেকে বার করে দিয়েই এমন চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার মা এমনটাই মনে করছে পুলিশ ও পাড়া প্রতিবেশী। স্ত্রীর এমন হঠাৎ মৃত্যুর খবর পেয়ে মহিলার স্বামী তীর্থপতি সামন্ত বাড়ি ফেরত আসছেন। দাম্পত্য অশান্তি, পারিবারিক বিবাদ নাকী অন্য কিছু কারণ? সমস্ত বিষয় তদন্ত করে দেখছে দাসপুর থানার পুলিশ।
মৃত মহিলার এক পরিজন জানান, “সরস্বতী পুজোর দিন শেষ মৌসুমীর সাথে কথা হয়েছিল। তারপর থেকে বেশ কদিন যোগাযোগ হয়নি। এরপর হঠাৎই আজকে ওর এমন খবর জানলেন। ওর স্বামী কাজের সূত্রে নেপালে থাকেন।” পাড়া-প্রতিবেশী জানান, “ওর স্বামী শরীর-গতিক ভালো না। কিন্তু মৌসুমী কেন এমন সিদ্ধান্ত নিল কে জানে। কিছু বুঝে ওঠা যাচ্ছে না। ওর বাচ্চা মেয়েটাকে দীর্ঘক্ষণ ধরে কাঁদতে শুনছিলাম। আর মায়েরও কোনো সাড়া-শব্দ ছিলনা। এসে দেখি এমন কাণ্ড”