চার বছর ধরে চলছিল প্রেম। বাড়ীর লোকেরাও জানত তাদের সম্পর্কের বিষয়ে। কিন্তু সেই প্রেমের যে এমন পরিণতি হবে আন্দাজ করেনি কেউই।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানী দিল্লির মহিপালপুরের একটি হোটেলে প্রেমিকের সঙ্গে আসেন এক তরুণী। ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে প্রেমিক একাই সেই হোটেল থেকে বের হয়ে চলে যান। আর ফেরেননি। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি হোটেলের কর্মীরা সন্দেহে হোটেল রুমটি জোর করে খুলে ঢুকলে সেখানকার দৃশ্য দেখে তাদের হুঁশ উড়ে যায়। ওই ঘরে মেয়েটির প্রাণহীন নিথর দেহ পড়ে ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে। এই ঘটনায় মৃতার প্রেমিক শিবম চৌহান কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রেমিকা তার অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছে।
নিহত তরুণী তার পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন। গাজিয়াবাদের শিবম চৌধুরী নামে একটি ছেলের সঙ্গে গত ৪ বছর ধরে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দুজনেই কিছুদিনের মধ্যে বিয়ে করবেন এমনটাই ঠিক ছিল। মেয়েটি প্রায়ই তার বাড়িতে জানিয়ে প্রেমিকের সাথে দু-একদিনের জন্য বাড়ির বাইরে চলে যেত। এমনকি ২৫শে ফেব্রুয়ারি, তিনি তার পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে শিবমের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন। হোটেলে দুজনের দেখা হবে বলে পরিবারের সদস্যরা জানতেন। পরিবার সূত্রে জানা গেছে মেয়েটির কাছে ৬২ হাজার টাকাও ছিল।
পরিবারের সদস্যরা জানান, ২৫শে ফেব্রুয়ারি থেকে মেয়েটির ফোন সুইচ অফ আসছিল। তারা ভেবেছিল শিবমের কাছে সে নিরাপদেই থাকবে। কিন্তু ২৭শে ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যরা পুলিশের কাছ থেকে ফোন পেয়ে মহিপালপুরের হোটেলে পৌঁছয়। নিহতের বোনেরা মেয়েটির মৃতদেহ শনাক্ত করেছেন। বোনেরা জানান, মৃত তরুণী সব সময় প্রেমিকের কাছে বিয়ের কথা বললেও ওই যুবক বিয়ের বিষয়টি নিয়ে টালবাহানা করে পিছিয়ে দিতেন।
অভিযুক্ত শিবম চৌহানকে উত্তরপ্রদেশের বিশৌলি থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত তার অপরাধ স্বীকার করেছে। শিবম গাজিয়াবাদের বাসিন্দা। জিজ্ঞাসাবাদে শিবম জানায়, মেয়েটিকে সে ৪ বছর ধরে চেনে। এর আগে দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব ছিল, যা ধীরে ধীরে প্রেমে রূপ নেয়। শিবম পুলিশকে জানিয়েছে যে ২৫শে ফেব্রুয়ারি মেয়েটিকে নিয়ে তিনি হোটেলে পৌঁছেছিলেন, কিন্তু মেয়েটি ক্রমাগত তার ফোনে অন্য কারও সাথে কথা বলছিল। শিবম এই নিয়ে সন্দেহ করে। মেয়েটির কাছে কার সাথে কথা বলছে জানতে চাইলেও মেয়েটি কিছু না কিছু অজুহাত দিতে থাকে। তখন সে জানতে পারে তার বান্ধবী অন্য কোন ছেলের সাথে কথা বলছে। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। ঝগড়া এতটাই বেড়ে যায় যে শিবম তার বান্ধবীর মাথা মেঝেতে ঠুকে দিয়ে আঘাত করে, যার কারণে তার মৃত্যু হয়। এর পর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় শিবম। আপাতত তার বিচার চলছে।