আসামের এক মহিলার জন্য ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইটে জীবনসঙ্গী খুঁজতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত তাঁকে এক ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন করেছে। ইন্টারনেটে বিয়ের উদ্দেশ্যে তৈরী ওয়েবসাইটে নিজের জন্য পাত্র খুঁজছিল এক নারী। ওই মহিলার ইতিমধ্যেই বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছিল। সে ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইটে তার প্রোফাইল আপলোড করে। এই প্রোফাইল খুজেঁ বিহারের সুপলের ত্রিবেণীগঞ্জের বাসিন্দা এক যুবক তাকে নিজের ফাঁদে ফেলে। এর পর সেই যুবক অসমের মহিলার সঙ্গে এমন খেলা খেললেন, যা শুনলে অবাক হয়ে যাবেন।
যুবকটি প্রথমে ডিভোর্সি ওই মহিলা এবং তার মেয়েকে ত্রিবেণীগঞ্জে ডেকে নিয়ে তার কাছে রাখতে শুরু করে। দুই মাস ধরে ওই যুবক তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। যুবকের স্ত্রী আগেই মারা গেছেন। তিনি প্রোফাইলে লিখেওছিলেন তার পত্নী বিয়োগ হয়েছে এবং এরপরেই আসামের মহিলা তার প্রেমে পড়েছিলেন এবং তার মেয়েকে নিয়ে সুপল পৌঁছেছিলেন।
অভিযুক্ত যুবক ওই মহিলাকে বিয়ে না করলেও তার উপর যৌন নির্যাতন করে। তার সাথে তার মেয়েকেও নির্যাতন করা হয়। ওই যুবক ওই নারীর অশ্লীল ভিডিও তৈরি করেছিলেন। যেগুলি ব্যাবহার করে সে তাকে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকে। এরপর মহিলাকে তার আগের স্বামীর কাছ থেকে খোরপোশ স্বরূপ পাওয়া সাত লাখ টাকাও হারাতে হয়। অভিযুক্ত যুবক মহিলার কাছ থেকে জোর করে ৭ লক্ষ টাকার চেকে সই করে টাকা হাতিয়ে নেয়। নির্যাতিতা মহিলার বয়স ২৭ বছর।
ভুক্তভোগী নারীর বক্তব্যের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করে ত্রিবেণীগঞ্জ থানা পুলিশ এবং অভিযুক্ত যুবক প্রিন্স রাজ আর্যকে আটক করে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে প্রেরণ করেছে।
পুলিশ তার বয়ানে জানিয়েছে প্রিন্স রাজ আর্য নামে এক যুবক বিবাহিত সাইটের মাধ্যমে মহিলাকে নিজের জালে ফাঁসিয়ে নেয়। তিনি ওই মহিলাকে শুধুমাত্র দেখানোর জন্যই শিলিগুড়ির একটি মন্দিরে সাত পাকে ঘোরেন তার সাথে। তারপর থেকেই তিনি ওই নারীকে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন। নির্যাতিতা মহিলা জানায়, সে তাকে হুমকি দিত এবং অমানবিক ভাবে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করত। সেই সবের ভিডিও করে ল্যাপটপ ও মোবাইলে রাখত ওই ব্যক্তি। ভিডিওটি ভাইরাল করে দেবে বলে জন্য মহিলাকে বারবার হুমকি দিত অভিযুক্ত যুবক। মহিলার ভাষ্যমতে, আঙুলে লোহার রড পেঁচিয়ে তাকে নির্যাতন করত। নিষ্ঠুরতার সীমা পেরিয়ে ডিভোর্সি মহিলার সাড়ে চার বছরের মেয়েকেও হাত-পা বেঁধে বৈদ্যুতিক শট দিত অভিযুক্ত যুবক।
এরপর কোনোভাবে প্রাণ বাঁচিয়ে ত্রিবেণীগঞ্জ থানায় পৌঁছান ওই নারী। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ প্রথমে তার অশ্লীল ভিডিও রেকর্ড করা মোবাইলটি জব্দ করে অভিযুক্তকে কারাগারে পাঠায়। ত্রিবেণীগঞ্জ সুপল ডিএসপি গণপতি ঠাকুর জানান, অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভুক্তভোগী নারীর বক্তব্যের ভিত্তিতে পুরো বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অনেক অত্যাচারের শিকার হয়েছেন ওই নারী। পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে। আসামের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সুপল থেকে আসামে পাঠানোর আবেদন জানিয়েছেন ওই মহিলা।
