দিল্লি হাইকোর্টের দরজায় কড়া নেড়ে এক ব্যক্তি তার স্ত্রীর কারাবাস থেকে মুক্তি দাবি করেছেন। কিন্তু এই বন্দী দশা তার স্ত্রী কাটাচ্ছে বহুদূরে। ওই ব্যক্তি বলেছেন যে তার স্ত্রীকে ওমানে অবৈধভাবে বন্দী করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, তার স্ত্রীকে অন্য নারীদের সঙ্গে শিকল দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। বিচারপতি সঞ্জীব নারুলা এবং নীনা বনসাল কৃষ্ণের একটি অবকাশকালীন বেঞ্চ রাজ্য সরকারকে একটি স্ট্যাটাস রিপোর্ট দাখিল করতে বলে নোটিশ জারি করেছে।
অ্যাডভোকেট লোকেশ আহলাওয়াতের মাধ্যমে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়া লোকটি জানিয়েছেন যে তাঁর স্ত্রীর মোবাইলে এপ্রিল মাসে একটি ফোন এসেছিল। তাকে দিল্লির পাহাড়গঞ্জের একটি হোটেলে চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হয়। ফোনকারী লোকটি এবং তার স্ত্রীকে প্রস্তাবটি গ্রহণ করতে রাজি করানোর চেষ্টা করতে থাকে।
পিটিশনে বলা হয়েছে যে প্রাথমিকভাবে দম্পতি এটিকে একটি ভুয়ো কল ভেবেছিলেন এবং তা উপেক্ষা করেছিলেন। কিন্তু একই নম্বর থেকে থেকে বারবার কল এলে তিনি প্রস্তাবটি গ্রহণ করেন।
আবেদনকারী বিহারের বাসিন্দা
আবেদনকারী এবং তার স্ত্রী বিহারের বাসিন্দা এবং দরিদ্র পরিবারের। ফোনকারী তাকে বলেছিলেন যে প্রাথমিকভাবে মহিলাকে চাকরি দেওয়া হবে, তাই কেবল মহিলাকে প্রথমে দিল্লিতে আসতে হবে এবং কিছুদিন পরে স্বামীকে চাকরি দেওয়া হবে।
২৯ মে বিহার থেকে ট্রেনে করে দিল্লি পৌঁছন ওই মহিলা। দিল্লি পৌঁছানোর পর মহিলা তার স্বামীকে ফোন করে জানান যে তিনি পাহাড়গঞ্জের একটি হোটেলে অবস্থান করছেন। আবেদনকারী বলেন, সেদিন থেকে তার স্ত্রীর ফোন আসেনি। তিনি জানান, ৮ জুন তার স্ত্রীর কাছ থেকে ফোন আসে যে তাকে আরও বেশ কয়েকজন নারীর সঙ্গে একটি বড় হলে বেঁধে রাখা হয়েছে এবং তাদের সঙ্গে পশুর মতো আচরণ করা হচ্ছে। দিনে মাত্র একবার খাবার দেওয়া হয়।
১০ই জুন দিল্লি পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে
আবেদনে বলা হয়েছে, তাকে পতিতালয়ে রাখা হচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি। আবেদনকারীর পক্ষে বলা হয়েছে যে, মনে হচ্ছে তার স্ত্রী অপহরণ, অবৈধভাবে আটকে রাখা, পতিতাবৃত্তি এবং মানব পাচারের শিকার হয়েছেন। তিনি বলেছিলেন যে ১০ই জুন দিল্লি পুলিশ কমিশনারের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। যদিও অভিযোগের পরেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি দিল্লি পুলিশ।
দিল্লি পুলিশের একজন পরিদর্শকের দেওয়া তথ্যের পরে, রাজ্য সরকারের আইনজীবী আদালতকে বলেছিলেন যে এখনও পর্যন্ত তদন্ত অনুসারে, লোকটির স্ত্রী ওমানে থাকলেও তাকে কোনো চাকরি দেওয়া হয়নি। আগামী ৭ জুলাই এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।