বিহারের কাইমুর জেলার চানপুর থানা এলাকার সিকান্দারপুর গ্রাম থেকে একটি মর্মান্তিক ঘটনা সামনে এসেছে। যৌতুকে বাইক না পেয়ে স্বামী নিয়াজ খান বৌদি রুবানাকে সঙ্গে নিয়ে ওড়না ব্যাবহার দিয়ে নিজের স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। এরপর ঘটনাকে আত্মহত্যার রূপ দিতে ওড়নার সাহায্যে ফাঁস দিয়ে ফ্যানে ঝুলিয়ে দেন। জানা গেছে, বৌদি রুবানা খাতুনের সঙ্গে অভিযুক্ত স্বামী নিয়াজের অবৈধ সম্পর্ক ছিল, যার কারণে ওই মহিলাও এই বিয়েতে অসন্তুষ্ট ছিলেন। তারা দুজনে মিলে হত্যার ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র করে।
বাইক না পেয়ে খুন করেন স্বামী:
নিহতের বাবা অভিযুক্ত স্বামী ও বৌদির বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে ৫ জুলাই। অভিযোগ দায়ের করার ১২ ঘন্টার মধ্যে পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নেয় এবং ভগ্নিপতি ও অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেফতার করে। নিহতের বোন জানান, বিয়ে হয়েছিল মাত্র ২০ দিন আগে। এরপর থেকে যৌতুকের দাবিতে তারা আমার দিদিকে নির্যাতন করত। যৌতুকে বাইক দাবি করছিল। নিহতের বাবা বলেন, ‘আমরা তাকে জানিয়েছিলাম যে আমরা এত ধনী নই যে তোমাকে যৌতুকে বাইক কিনে দেব। কোনোভাবে সংসার লালন-পালন করি। কিন্তু সে কোনো কথা না শুনে আমার মেয়েকে হত্যা করেছে।
প্রথম স্ত্রীকে ছেড়ে দ্বিতীয় বিয়ে করছিলেন:
জানা গেছে অভিযুক্ত স্বামীকে তার প্রথম স্ত্রী ছেড়ে চলে গেছেন, যার মামলা এখনও চলছে চান্দৌলি জেলায়। এরপর আবার বিয়ে হয়। অভিযুক্ত বৌদি পুলিশকে জানিয়েছে, নিয়াজ যৌতুকে বাইক চেয়েছিল, বাইক না পেয়ে খুব ক্ষিপ্ত ছিল। তার সাথে আমার আগে সম্পর্ক ছিল, কিন্তু বিয়ের পর থেকে আর নেই। সে আমাকে বউয়ের পা ধরে রাখার জন্য ডেকেছিল, আমি তার পা চেপে ধরলে সে তার স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং তারপর একই ওড়না দিয়ে ফ্যানের সাথে দেহ ঝুলিয়ে দেয়। আমি শুধু পা ধরেছিলাম এ ছাড়া আমার কোন দোষ নেই।
এই ঘটনার খবর পেয়ে সিকান্দারপুর গ্রামের পুলিশ ঘটনাস্থলে যখন পৌঁছয় মৃতদেহের শেষকৃত্যের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন পরিবারের সদস্যরা। পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় হয়েছে এবং নিহতের মামার আবেদনের ভিত্তিতে চানপুর থানায় একটি এফআইআর দায়ের করে।
মামলার তদন্তে জানা যায় অভিযুক্ত স্বামী বধূকে ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং পরে আত্মহত্যা বোঝাতে দেহ ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে দেয়। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ওড়না উদ্ধার করা হয়েছে এবং বৌদি ও স্বামী উভয়েই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। মামলা নথিভুক্ত করার ১২ ঘন্টার মধ্যে, পুলিশ উভয় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে এবং আরও তদন্ত চলছে।