এক মহিলা তার বছর ৩৫ এর ডিভোর্সি ছেলের জন্য পাত্রী খুঁজছিলেন। উনি তামিলনাড়ুর তিরুভাল্লুর জেলার পুদুপেট্টাই এলাকার বাসিন্দা। বছর ৬৫ এর ইন্দ্রানী দেবীর ছেলে এক বেসরকারি কোম্পানির ম্যানেজার। পাঁচ বছর ধরে তিনি ছেলের জন্য পাত্রী খুঁজেছেন। শেষমেষ আগের বছর অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি জেলার পুত্তুরের বাসিন্দা সারনিয়া নামে এক মহিলার খোঁজ তিনি পান। এই যোগাযোগ হয় এক ঘটকের মাধ্যমে।
অন্ধ্রপ্রদেশে ইন্দ্রানী দেবী তার ছেলের সঙ্গে মেয়ে দেখতে যান, আর তারা বাড়িতে পাত্রী দেখতে আসবেন জানতে পেরেই ৫৪ বছর বয়সী সারনিয়া এক বিউটি পার্লারে সাজতে যান সেখানে বিউটি পার্লারের কর্মীরা এতটাই মেক আপ করেছেন তার, যে তার আসল বয়স কত সেটাই বোঝা যাচ্ছিল না। তাঁকে দেখে বছর ৩০ এর কোনও যুবতী বলে মনে হচ্ছিল ইন্দ্রানী দেবী এবং তার পুত্রের। এই ঘটনার পর সারনিয়াকে ইন্দ্রানী দেবী এবং তার পুত্রের দুজনেরই পছন্দ হয়, ইন্দ্রানী দেবী জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁদের বিয়ে দিয়ে ২৫ গ্রাম সোনাও তুলে দেন নতুন বউয়ের হাতে উপহার হিসেবে।
কিন্তু অশান্তি শুরু হয় বিয়ের পর, যখন সারনিয়া স্বামী এবং শাশুড়ির সঙ্গে সব সম্পত্তি লিখে দিতে হবে বলে অশান্তি শুরু করেন। সেই অশান্তি এমন রূপ নেয় যে শাশুড়ি ইন্দ্রানী দেবীকে বাড়ি থেকে বের করে দেন সারনিয়া। তারপর এই অশান্তি সহ্য না করতে পেরে অবশেষে রাজি হন ইন্দ্রানী দেবীর পুত্র। সম্পত্তি যখন সারনিয়ার নামে করতে যান তখন ছেলে ও মায়ের হাতে সারনিয়ার আধারকার্ড আসে। কিন্তু সন্দেহ তখন হয় যখন ওই কার্ডে কেয়ার হোল্ডারের জায়গায়, নাম থাকে ‘রবি’। তারপরই তারা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ।
আধার কার্ডের সূত্র ধরে পুলিশ তদন্ত শুরু করে আর অবশেষে সঠিক তথ্য পেয়ে যান। পুত্তুর নিবাসী সারনিয়া ওরফে সুকন্যা ওরফে সন্ধ্যা এরমধ্যেই ওই শহরেরই বাসিন্দা রবি নামের ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে করেছিলেন। বছর দুয়ের মেয়েও ছিল তাদের এবং বিয়েও হয়েছিল। রবির সাথে অশান্তির জেরে একসাথে থাকতেন না তারা, সারনিয়া তার মায়ের সাথেই থাকতেন।
কোনও আয় না থাকায় আর্থিক ভাবে সমস্যায় ছিলেন তারা। এই অনটন কাটাতে মেয়ের বিয়ে দেওয়ার জন্য ঘটকের সাথে যোগাযোগ করেন সারনিয়ার মা। তাঁদের ডিভোর্সি মধ্যবয়সী ব্যক্তিদের সহায়তাতেই সারনিয়া নিজের শিকার বানিয়েছেন। সারনিয়া এরমধ্যেই নিজের পরিচয় পাল্টে নিজেকে সন্ধ্যা হিসাবে পরিচয় দিয়ে সুব্রামণি নামে একজনকে বিয়ে করেন এবং তাঁর সঙ্গে সংসারও করেন প্রায় ১১ বছর ধরে।
কোভিডের সময় অর্থাৎ লকডাউনে ওই সংসার থেকে বেরিয়ে তিনি তার মায়ের কাছে ফিরে আসেন। এর পর ইন্দ্রাণী দেবীর পুত্রকে টার্গেট করেন। সারনিয়া ১০ লক্ষ টাকা আদায় করেছিলেন এর আগের স্বামী রবির থেকে। এখন সম্পূর্ণ বিষয়টির তদন্ত চলছে।