প্রতিবছর ভুটান পাহাড় থেকে নেমে আসা নদীগুলোই বর্ষার মরশুমে কুমারগ্রামের মানুষের দুর্দশার কারণ হয়ে ওঠে৷ ব্যতিক্রম এবারেও নেই। ডুয়ার্সে বর্ষার প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় কার্যত বেশিরভাগ গ্রামের বাসিন্দাদের রাতের ঘুম উড়েছে কুমারগ্রাম ও দুই নম্বর ব্লকের৷ বর্ষার শুরুতে বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে সংযোগরক্ষাকারী বাঁশের সেতু অল্প বৃষ্টিতেই উড়ে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় মানুষজন। যার ফলে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে এক কিলোমিটার দূরের গন্তব্যে পৌঁছতে হচ্ছে৷
বর্ষার শুরুতে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে কুমারগ্রামের বেশ কয়েকটি নদীর ভাঙন। বেশকিছু চাষের জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে৷ প্ৰথম বর্ষাতেই কুমারগ্রাম ও দুই নম্বর ব্লকের বাসিন্দাদের নদী ভাঙনের এই চিত্রে আতঙ্ক তাড়া করছে৷ যার জেরে প্রবল বর্ষা শুরুর আগেই স্থানীয় মানুষ কুমারগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় শক্তপোক্ত নদীবাঁধ দেওয়ার দাবি তুলেছেন৷
প্রতিবছর প্লাবন পরিস্থিতির সৃষ্টি করে কুমারগ্রাম ব্লকের সংকোশ, রায়ডাক, নদীর জলস্ফীতি। নদী সংলগ্ন প্রায় ৮ টি বাড়ি নদীগর্ভে চলে যায় গত বর্ষায় সংকোশ ও রায়ডাকের ভাঙনে৷ অন্যদিকে বর্ষার জেরে নদীগর্ভে চলে গিয়েছে অসম সংলগ্ন এই এলাকার প্রায় ১০০ একর জমিও বলে জানা গিয়েছে৷
এই বিষয়ে অনুপ দাস ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা বলেন, “আমি সেচ দফতরের নজরে নদীভাঙনের বিষয়টি এনেছি।” পাশাপাশি নির্মলকুমার লঙ্কেশ্বর সেচ দফতরের কামাখ্যাগুড়ি সাব ডিভিশনের আধিকারিক বলেন,”নদীভাঙন আটকানোর জন্য ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷ কয়েকটি জায়গায় কাজ শুরুও করা হয়েছে।”
এদিকে কয়েকদিন আগে ভেসে গিয়েছে চেকোব নদীর উপরে বাঁশের সাঁকোটি ৷ যার জেরে নৌকার সাহায্য নিতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের শহরে যাতায়াতের ক্ষেত্রে৷ পাশাপাশি ভেসে গিয়েছে রায়ডাক ১ নম্বর নদীর উপর বাঁশের সাঁকোটিও৷ একই অবস্থা সেখানেও৷ এছাড়া একশো মিটারেরও বেশি জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভাটিবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বোড়াগাড়ি গ্রামে গদাধর নদীর ভাঙনে। পাশাপাশি তিনশো মিটারের মতো চাষের জমি নষ্ট হয়েছে টটপাড়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের নামনি যশোডাঙ্গায় বামনী নদীর ভাঙনের জেরেও। অন্যদিকে ভাঙন দেখা দিয়েছে ভালুকডাবরিতে চেকো নদীরও৷ সেখানেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মাটির বাঁধটি৷