শঙ্খ হল এক ধরণের সামুদ্রিক শামুক জাতীয় প্রাণী। এটি থাকে প্রতিটা হিন্দু বাঙালি বাড়িতে। নিয়মিত সন্ধ্যাবেলা শঙ্খ বাজানো হয় প্রত্যেক বাঙালি বাড়িতে। এই কথা জানি আমরা সকলেই । গৃহস্থবাড়িতে ভগবানের আরাধনা করা হয় দিন শেষে সূর্য অস্ত গেলে আর সঙ্গে ভগবানকে আমন্ত্রণ করা হয় শঙ্খ বাজিয়ে। এই রীতি প্রাচীনকাল থেকে চলে আসছে হিন্দুদের মধ্যে। এটা নতুন কোনো কথা নয়।
এটি প্রধানত কাজে লাগে পূজা অর্চনার। কিন্তু একটা কথা অনেকের অজানা যে, কখনই সকালে বাজাতে নেই শঙ্খ। এর কারণ হল, যখন সকালে যুদ্ধ শুরু হত মহাভারতে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের সময়, তখনই শঙ্খ বাজানো হত। এর অর্থ হল যুদ্ধের সূচনা করে সকালে শঙ্খের ধ্বনি। বয়ে নিয়ে আসে যুদ্ধের খবর। অন্যদিকে যুদ্ধের শেষ হত সন্ধ্যের সময় , তখন শঙ্খ বাজানো হত আরেকবার। সন্ধ্যার শঙ্খধ্বনি ঘোষণা করে যুদ্ধের সমাপ্তি। তাই সন্ধ্যাবেলায় শঙ্খ বাজানোর নিয়ম প্রাচীনকাল থেকেই। সন্ধ্যাবেলায় শঙ্খ বাজানোর অর্থ হল, শান্তি ফিরে এল সারাদিনের যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।
কেন শঙ্খ তিনবার বাজানো হয়? শঙ্খ তিনবারের বেশি বাজানো হয় না।
জীবনের সুখ-শান্তি ফেরানোর জন্য শঙ্খ বাজানো হয়। অশুভ শক্তি যাতে বাড়ির আশেপাশে প্রবেশ না করতে পারে আর শুভ শক্তির প্রভাব বৃদ্ধি পায় বাড়িতে শঙ্খ বাজানো হয় সেই জন্য। পরিবারের সকলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে শঙ্খ নিয়মিত বাজালে । কোন খারাপ সময় আসে না তাদের জীবনে । পাশাপাশি ফিরে আসে নতুন করে চলার পথ জীবনে । আমাদের সকলেরই এইসব কথা জানা।
যা আমাদের অজানা সেটি হল কেন তিনবার বাজানো হয় শঙ্খ ? বাড়ির গুরুজনেরা পুজো করবার সময় তিনবার শঙ্খ বাজান আমরা ছোট থেকেই দেখে আসছি। কারণ, দেব দেবীদের আমন্ত্রন জানানো হয় শঙ্খ তিনবার বাজালে। এমনটাই শাস্ত্রে লেখা রয়েছে। দেব দেবীরা অসন্তুষ্ট হয়শঙ্খ তিনবারের বেশি বাজালে। রুষ্ট হন বিশেষ করে মহাদেব, বিষ্ণু, ব্রহ্মার মত দেবেরা। এর ফলে তাদের কোপের মুখে পড়তে হয় আশীর্বাদের জায়গায়। আপনার পরিবারের উপর বিপদ নেমে আসতে পারে। এই কারণে শঙ্খ বাজানোর পরামর্শ দেওয়া হয় তিনবারই।