আমরা সকলেই কখনো না কখনো শুনেছি তিব্বত ‘নিষিদ্ধ দেশ’ , আর তিব্বতের রাজধানী লাসা হল ‘নিষিদ্ধ নগরী’। এই রহস্য ঘেরা তিব্বতের প্রকৃতি অত্যন্ত দুর্গম । হিমালয় পর্বতের উত্তরে বরফাবৃত দেশ হল তিব্বত।পৃথিবীর উচ্চতম শহর লাসা, যার উচ্চতা ১১ হাজার ৯৭৫ ফুট। সেই প্রাচীন কাল থেকে তিব্বত নিজেদের গোপন করে রেখেছে বহির্বিশ্ব থেকে। আড়াল করে রেখেছে নিজেদের রহস্য। নিজেদের দেশ তিব্বতের ব্যাপারে বাইরের দুনিয়াকে বেশি কিছু জানাতে পছন্দ করেন না তিব্বতবাসি।
কিন্তু কেন? কী আছে প্রকৃতির মতোই শান্ত দেশ তিব্বতে? এ ব্যাপারে সবার মনে রয়েছে প্রশ্ন।
শান্তিপ্রিয় তিব্বতীরা
পুরো তিব্বতের মধ্যে নিষিদ্ধ মুলত এর রাজধানী লাসা। লাসা কে বলা হয় নিষিদ্ধ নগরী। লাসার মানুষেরা নিজেদেরকে বহির্বিশ্ব থেকে পুরোপুরি আলাদা রাখতেই পছন্দ করেন। তিব্বতের রাজধানী লাসার মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রাও অনেকটাই আলদা ধরনের আর রোমাঞ্চকর। তিব্বত বর্তমানে কোনো আলাদা দেশ হিসেবে স্বীকৃত নয়। চীনের অধীনে রয়েছে।
লাসা শব্দটির আক্ষরিক অর্থ হলো ‘ঈশ্বরের জায়গা’। তিব্বতিরা মুলত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। তাদের জীবনে এই ধর্মীয় আচার বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান দখল করে আছে। সমগ্র লাসা জুড়েই ধর্মীয় নানা আচার আচরণ গুরুত্বপূর্ন ভাবে পালন করা হয়ে থাকে। তিব্বতিদের প্রধান ধর্মগুরু দালাই লামার বাসস্থানও লাসার পোতালা প্রাসাদে। কিন্তু বর্তমানে অবশ্য তিনি ভারতের ধর্মশালায় আশ্রিত রাজনৈতিক কারণে।
শোনা যায়, এই পোতালা প্রাসাদের চূড়াটি সোনার তৈরি। এই বিশালাকার প্রাসাদটি তিব্বত প্রাচীন কাল থেকে বাকি বিশ্ব থেকে আলাদা করে রেখেছিল। এই পোতালা প্রাসাদটি প্রথম জনসম্মুখে আসে ১৯০৪ সালে। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয় প্রথম প্রকাশিত হয়। এর আগে পর্যন্ত পৃথিবীর কেউ এই প্রাসাদটির ছবি দেখতে পায়নি। এইরকম বাইরের দুনিয়া থেকে আড়াল করা বহু বৌদ্ধ মন্দির লাসা শহর জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে । এমনকি এই নগরে ৪ হাজার ভরি ওজনের একটি স্বর্ণ প্রদীপও আছে।
এই ভাবে সাধারণ জনগণের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকায় আস্তে আস্তে এই শহরটি পরিচিতি হয়ে উঠে নিষিদ্ধ নগরী হিসেবে। শুধু বাইরের লোকের উপর লামাদের নিষেধাজ্ঞাই নয়, দুর্গম প্রকৃতিও লাসা শহরকে রহস্যময় করে রেখেছে।