মহালয়ার ভোরবেলা হওয়া মানেই মা দুর্গার মর্ত্য ধামে আগমন কালের সূচনা হয়ে গেল। পিতৃপুরুষকে পিতৃপক্ষের অবসানের মুহূর্তে তর্পণ এর মাধ্যমে জল পিন্ডি প্রদানের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানানোর দিন পাশাপাশি দেবীপক্ষের সূচনায় ঘরের মেয়ে উমাকে আওহানের দিন। পিতৃপক্ষের সমাপ্তিতে, অমাবস্যা তিথিতে মহালয়া পালিত হয়ে থাকে। এই অমাবস্যা তিথিকে আবার পুরাণ ও শাস্ত্রে সর্বপিতৃ অমাবস্যা, বিসর্জনী অমাবস্যা ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়। এদিন শ্রাদ্ধ, তর্পণ করে পিতৃপুরুষদের পিন্ড দান করা হয় কেননা দেবীপক্ষের সূচনা হয় এবং এই দিনে দেবীর চক্ষু দানও করা হয়। তবে মহালয়ার দিনে বিশেষ কিছু নিয়ম, রীতি , নীতি মেনে চলা উচিত। এমন কিছু কাজ আছে, যা এই দিনে ভুলেও করবেন না। আবার মহালয়ার দিনে অবশ্য কিছু পালনীয় কর্তব্যও আছে। পূর্বপুরুষদের আশীর্বাদ যাতে আমাদের উপর সব সময় থাকে তার জন্য এই কাজগুলি অবশ্যই করা উচিত।
১. মহালয়ার দিন কোনও শুভ কাজে হাত দিতে নেই। এদিন আগামী কোনো বিয়ের তারিখ বা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা না করাই ভালো। বাড়ি, গাড়ি কেনা ইত্যাদি বিষয়ে না এখনো ভালো। নতুন কোনো ব্যবসাও শুরু করবেন না।
২. মহালয়ার দিন আমিষ ভোজন করা উচিত নয়।
৩. পূর্বপুরুষের ছবির অনেকেই এইদিন তাদের প্রিয় খাদ্য সাজিয়ে দেন। কিন্তু খেয়াল রাখবেন তাদের সামনে কোনোভাবেই কোনো আমিষ খাবার দেবেন না।
৪. তর্পণ করবেন যে ব্যক্তি, তিনি এই দিন চুল-দাঁড়ি কাটবেন না।
৫. মহালয়ায় অমাবস্যায় ধমূপান, মদ্যপান করা বারণ।
৬. এদিন কেউ আপনার কাছে দান-দক্ষিণা চাইলে, তাঁদের কোনোভাবেই কিচ্ছু না দিয়ে ফিরিয়ে দেবেন না। বাড়িতে কোনো ভিক্ষুক খাবার চাইতে এলে খালি পেটে ফিরিয়ে দেবেন না। তাঁদের খাবার অবশ্যই দেবেন। তৈরী খাবার না থাকলে আটা বা চালও দান করা যেতে পারে।
মহালয়ায় কি কি কাজ অবশ্যই করবেন জেনে নিন—
১. এইদিন ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠুন আর স্নান সেরে নিন।
২. স্নান সেরে, ধুতি পরে পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে তর্পণ করুন। কিছু খেয়ে তর্পণ করা উচিত নয়।
৩. যাঁরা কোনো কারণে তর্পণ করতে পারবেন না, তাঁরা পূর্বপুরুষের ছবিতে এই দিন মাল্যদান করুন আর তার প্রিয় খাদ্য দ্রব্য ছবির সামনে রেখে দিতে পারেন।
৪. এই দিনে দান-ধ্যান করা অত্যন্ত শুভ। দরিদ্রদের খাবার খাওয়ান, দান করুন।
৫. গোরু, কুকুর, কাক ইত্যাদি প্রাণীকে খাবার খাওয়ানো মহালয়ার দিন বিশেষ শুভ।
৬. মহালয়ার দিন শ্রী বিষ্ণুর নাম জপ করুন। এ ছাড়া রামায়ণ, মহাভারত অথবা গীতা ইত্যাদি ধর্মগ্রন্থ পাঠ করা শুভ।