কালীপুজো চলে গেলেও, পূজো আর উৎসবের মরশুম শেষ হয়ে যায়না। কার্তিক মাসের শুক্ল পক্ষের তিথিতে শুরু হয় ছট পুজো। বিহার, ঝাড়খণ্ড, পূর্ব উত্তরপ্রদেশ এবং নেপালের তরাই অঞ্চলে ধুমধাম করে পালিত হয় ছট পুজো। এখন পশ্চিম বঙ্গেও এই পুজোর রমরমা। ধর্ম এবং লোকবিশ্বাস অনুযায়ী নিষ্ঠা সহ এই ব্রত করে সূর্যদেবকে প্রসন্ন করতে পারলে মনের সকল আকাঙ্খা পূর্ন হয়। বহু মনোবাসনা সম্পন্ন হয়ে যায় এই ছট পুজো ঠিক ভাবে করলে। ছট পুজোকে সমস্ত পুজো বা ব্রতের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন উপবাস বলে মনে করা হয়, কারণ এর নিয়ম খুবই কঠোর।
ছট পুজোর নিয়মের মধ্যে মধ্যে সবচেয়ে কঠিন বিষয় হল টানা ৩৬ ঘণ্টার নির্জলা উপবাস। কার্তিক মাসে বাকি সব নিয়ম এবং রীতি পালনের সাথে নির্জলা উপবাস ভঙ্গ করেই কোনো জলাশয়ে সূর্যদেবকে প্রথম জল অর্পণ করে শুরু হয় ছটের মহাপর্ব। সাধরাণত বিবাহিত মহিলারা দাম্পত্য জীবনের সুখ শান্তি এবং সন্তান লাভের আশায় বা সন্তানের মঙ্গল কামনায় এই ছটের বিধি পালন করেন।
চলুন জেনে নিই এই ব্রত পালন করতে গেলে কী কী বিষয় মাথায় রাখতে হবে।
সূর্যদেবের উদ্দেশ্যে কিসের বাসনে অর্ঘ নিবেদন করবেন:
সূর্য যে কোনো পাত্রে অর্ঘ দান করবেন না। ভুলেও যেন পাত্র কখনই রূপো, স্টীল, কাঁচ বা প্লাস্টিকের নির্মীত না হয়। মাটির পাত্রে বা তামার বাসনে সূর্যের উদ্দেশ্যে অর্ঘ দান করা সবচেয়ে ভালো।
ছট পুজোর প্রসাদ তৈরীর স্থান:
যে স্থানে রোজকার বাড়ির রান্না বান্না হয় সেখানে ভুলেও ছট পুজোর প্রসাদ তৈরি করবেন না। পুজোর প্রসাদ নতুন মাটির উনুনে তৈরী করুন।
বিছানায় পিঠ ঠেকাবেন না:
ছট ব্রত রাখছেন যে সব মহিলারা তাঁদের বিছানায় শোয়ার রীতি নেই এই কদিন। এই ব্রত বেশ কঠিন। যে সব মহিলারা ব্রত রাখছেন তাঁরা মাটিতে চাদর পেতে ঘুমাবেন।
প্রসাদ তৈরির ভুলেও কিছু খাবেন না:
ছট পুজোর প্রসাদ রান্না করার সময় কোনও খাবার ভুলেও খাবেন না। প্রসাদ তৈরির সময় এবং ব্রত রাখার সময় সকলের উচিৎ পরিস্কার কাপড় পরিধান করা।
পরিষ্কার ধোয়া হাত ছাড়া পুজোর জিনিসে স্পর্শ নয়:
হাত ভালো করে না ধুয়ে পূজার কোনও জিনিসে হাত লাগাবেন না। ছট ব্রত সম্পূর্ন না হওয়া পর্যন্ত যাতে বাড়ির ছোট বাচ্চারা ছট পূজার নৈবেদ্য এঁটো না করে খেয়াল রাখবেন।
মুখের ভাষা যেন অশালীন না হয়:
ছট পূজায় ব্রত রাখছেন এমন ব্যক্তিদের অপশব্দ ও অশালীন ভাষার প্রয়োগ করা একেবারেই উচিত নয়। শুদ্ধ চিত্তে থাকুন
প্রসাদ হিসাবে তৈরি করুন ঠেকুয়া:
ছট পুজো প্রসাদ হিসাবে সূর্য দেবতার উদ্দেশে অর্পণ করা হয় ঠেকুয়া। এই খাবারকে খাজুরিয়া বা ঠিকারি বলা হয়। ঠেকুয়া আটা, ঘি, নারকেল ও চিনি ইত্যাদি দিয়ে বানানো হয় এবং ছাকা তেলে ভাজা হয়।