বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছে করোনা ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ কিছুতেই এড়ানো যাবে না । কিন্তু গত দেড় বছর ধরে শরীরও এখন অভ্যাস করে নিয়েছে করোনার সঙ্গে লড়াই করতে করতে। করোনা প্রতিরোধের শক্তি বাড়িয়ে তুলেছে। ভ্যাকসিন তো রয়েছে তার ওপর। এমন অবস্থায় আইসিএমআরের সেরো সার্ভের মধ্যে দিয়ে উঠে এল অ্যান্টিবডি সম্পর্কিত এক বিশেষ তথ্য।
দেশের এগারোটি রাজ্যে ১৪ জুন থেকে ৬ জুলাই সেরোসার্ভে চালায় আইসিএমআর (ICMR)। সেই সার্ভে বলছে প্রতিটি রাজ্যে প্রায় দুই তৃতীয়াংশ মানুষের শরীরে কোভিডের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে৷ তৃতীয় ওয়েভ আসার মুখে যা সাময়িকভাবে প্রত্যেককে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে বলে মনে হয়। তবে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি আইসিএমআরের পক্ষ থেকে এই অ্যান্টিবডি আদৌও দীর্ঘস্থায়ী কিনা সে বিষয়ে৷
কোন রাজ্যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে কত শতাংশ মানুষের শরীরে?রাজস্থানে ৭৬.২% মানুষের দেহে মিলেছে অ্যান্টিবডি
বিহারে ৭৫.৩ % মানুষের দেহে মিলেছে অ্যান্টিবডি
গুজরাটে ৭৫.৩ % মানুষের দেহে মিলেছে অ্যান্টিবডি
অন্ধ্র প্রদেশে ৭০.২ % মানুষের দেহে মিলেছে অ্যান্টিবডি
কর্ণাটকে ৬৯.৮ % মানুষের দেহে মিলেছে অ্যান্টিবডি তামিলনাড়ুতে
ও ওডিশায় ৬৮.১ % মানুষের দেহে মিলেছে অ্যান্টিবডি
রাজ্যগুলিকে সেরো সার্ভে চালিয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফ থেকে। থার্ড ওয়েভের সময় করোনার সঙ্গে লড়াই করতে কোন রাজ্য কতটা প্রস্তুত এতে বোঝা যাবে।
পশ্চিমবঙ্গে কত শতাংশ মানুষের দেহে মিলেছে অ্যান্টিবডির খোঁজ?
পশ্চিমবঙ্গে করোনায় সংক্রামিত হয়েছেন প্রতি পাঁচ জন মানুষই মধ্যে তিন জনই কখনও না কখনও। তাই ৬০.৯ শতাংশ রাজ্যবাসীর শরীরে মিলেছে কোভিড অ্যান্টিবডি এমনটাই সেরো সার্ভে বলছে। অর্থাৎ, রাজ্যের বড়জোর ৩৯.১ শতাংশ মানুষ তৃতীয় ঢেউয়ে ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারেন।
কিন্তু এই পরিসংখ্যান যেহেতু ৭০টি জেলার (পশ্চিমবঙ্গের পাঁচটি) মাত্র ৩৬ হাজার জনের (এই রাজ্যে প্রায় ২৬০০ জন) উপর করা সমীক্ষার ফল তাই ১৩০ কোটি জনসংখ্যার দেশে, করোনা সংক্রমণের এত স্বস্তিদায়ক না-ও হতে পারে আসল চিত্রটা বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকও। সে জন্যই আরও নির্ভুল করোনা-চিত্র পেতে জেলাভিত্তিক সেরো সার্ভে করার নির্দেশ দিল কেন্দ্র পশ্চিমবঙ্গ-সহ সব রাজ্যকে।
অবশ্য বিশেষজ্ঞরা আত্মনিয়ন্ত্রণ করাকেই জরুরী বলছেন। ভবিষ্যতে যদি ডেল্টা প্লাস কিংবা করোনার অন্য কোনও ভ্যারিয়েন্ট বা স্ট্রেন হানা দেয়, এই অ্যান্টিবডি কতটা কাজে আসবে তখন, সন্দেহ আছে। তাই সেরো-সার্ভের ফল দেখে হয়তো বিপদ আছে আত্মতুষ্টিতে ভুগে করোনাবিধি ত্যাগ করলে কিংবা প্রশাসনিক কড়া বিধিনিষেধ উঠে গেলে।’