বছর শেষে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অনেকখানি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হলেও নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে নয়া স্ট্রেন ‘ওমিক্রন’। যতদিন যাচ্ছে, ভারতে বাড়ছে দ্রুত মিউটেড হওয়া শক্তিশালী এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা। এই আলোচনার মধ্যেই এবার শিরোনামে উঠে এসেছে নতুন একটি শব্দ। ডেলমিক্রন (Delmicron)। শোনা যাচ্ছে পশ্চিমের দেশগুলিতে ডেলমিক্রনের দাপট নাকি বাড়ছে। তবে কি এটি করোনা ভাইরাসের নয়া প্রজাতি? ঠিক কতখানি ভয়ংকর ডেলমিক্রন?
মহারাষ্ট্রের কোভিড-১৯-এর (COVID-19) টাস্ক ফোর্সের সদস্য ডা. শশাঙ্ক যোশী জানান, এটি ভাইরাসের নতুন কোনও প্রজাতি নয়। আসলে ব্রিটেন ও আমেরিকার একাধিক জায়গায় একই সঙ্গে করোনার ডেল্টা এবং ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট চোখ রাঙাচ্ছে। সুনামির মতো ছড়িয়ে পড়া দুটি ভাইরাসের দাপট একসঙ্গে বোঝাতেই ডেল্টা ও ওমিক্রনকে জুড়ে ডেলমিক্রন শব্দ জন্ম নিয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, আমেরিকায় নতুন করে সংক্রমিতদের মধ্যে ৭৩ শতাংশের শরীরেই মিলেছে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। আবার গত মাসে মার্কিন মুলুকে ৯৯.৫ শতাংশই ডেল্টা (Delta) ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত।
দক্ষিণ আফ্রিকা (South Africa) থেকে ছড়ানো এই ওমিক্রন প্রজাতি ইতিমধ্যেই ঢুকে পড়েছে ৮৯টি দেশে। এর মধ্যে আবার চলতি সপ্তাহেই আমেরিকার টেক্সাসে প্রথমবার ওমিক্রন আক্রান্তের মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। একের পর এক টুইট করে দেশবাসীকে সতর্ক করেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তারও আগে বিশ্বে প্রথম ইংল্যান্ডেই প্রাণ হারান ওমিক্রন সংক্রমিত ব্যক্তি। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাঁদের শরীরেই পরপর থাবা বসাচ্ছে ডেল্টা এবং ওমিক্রন (Omicron)। তাই যে সমস্ত এলাকায় টিকাকরণের হার তুলনামূলক কম, সেখানেই এই ভ্যারিয়েন্টের প্রভাব বেশি। ভারতে ইতিমধ্যেই ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে সাড়ে তিনশোর কোটা। প্রশ্ন হল ডেলমিক্রন কি ভারতেও জাঁকিয়ে বসতে পারে? বিশেষজ্ঞদের দাবি, বর্তমানে এ দেশে ডেল্টার দাপট বেশি। সেই স্থান ধীরে ধীরে দখলের চেষ্টা করছে ওমিক্রন। তবে দুটি ভাইরাস একইসঙ্গে দাপিয়ে ব্যাটিং করবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। সব মিলিয়ে উৎসবের মরশুমে প্রত্যেককে সতর্ক থাকারই পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।