গত দুবছর ধরে করোনা ভাইরাসের নিত্য নতুন ভ্যারিয়েন্টের আগমন হয়েই চলেছে। দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর তৃতীয় ঢেউয়ের শেষ হতে না হতেই করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট এর খোঁজ পাওয়া গেলো। তাঁর নাম ওমিক্রন (Omicron)। সারা বিশ্ব এই নিয়ে আতঙ্কিত। দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় যে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছিল এই ওমিক্রন তাঁর থেকেও বেশি মারাত্মক। বিশেষজ্ঞ দের মতে করোনার এই নয়া প্রজাতি আরও বেশি সংক্রামক এবং আরও দ্রুত হারে ছড়িয়ে পড়তে চলেছে।
কিন্তু করোনার এই নয়া চরিত্র কতটা ক্ষতিকারক? ওমিক্রন সংক্রমণ ঘটেছে আপনার শরীরে কীভাবেই বা বুঝবেন।
ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট দক্ষিণ আফ্রিকায় চিহ্নিত হওয়ার পর, অ্যাঞ্জেলিক কোয়েটজির (Angelique Coetzee) সেই দেশের চিকিৎসক জানিয়েছেন, খুবই মৃদু ওমিক্রন-এর উপসর্গ। এদিকে, নতুন কোভিড ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের লক্ষণগুলি কী কী তা প্রকাশ্যে এনেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার এক চিকিৎসক। চিকিৎসকদের মতে কিছু লক্ষণ রয়েছে ওমিক্রনের যা সম্পূর্ণ ভিন্ন।
দক্ষিণ আফ্রিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (সামা) প্রধান ডঃ অ্যাঞ্জেলিক কোয়েটজির, তার এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে এই পর্যন্ত ৩০ জন রোগীকে করোনা ভাইরাসের নতুন রূপ ওমিক্রন দ্বারা সংক্রমিত হতে দেখেছেন গত ১০ দিনে। চরম ক্লান্তি, গলা ব্যথা, পেশী ব্যথা এবং শুকনো কাশির মতো সমস্যা রয়েছে ওমিক্রন দ্বারা সংক্রামিত রোগীর। বেড়ে যায় শরীরের তাপমাত্রা। কিন্তু একটা কথা মনে রাখা দরকার এর লক্ষণগুলো বেশ আলাদা করোনার আরেক অতি সংক্রামক প্রজাতি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট থেকে।
ডঃ কোয়েটজি আরও বলেন, এখনও অবধি যে কজন ওমিক্রনে সংক্রামিত রোগী তিনি দেখেছেন তাদের স্বাদ-গন্ধ যায়নি এবং দেহে হঠাৎ অক্সিজেন মাত্রাও কমেনি।
প্রাথমিক গবেষণায় আরো জানা গিয়েছে যে ওমিক্রনে পুনঃ সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি। অর্থাৎ যারা আগে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন – তাদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরী হওয়ার কারণে সাধারণত দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হবার দৃষ্টান্ত কম হলেও – ওমিক্রনের ক্ষেত্রে পুনঃ সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
দক্ষিণ আফ্রিকায় ওমিক্রন ভাইরাস প্রথম চিহ্নিত হয়। এতে আক্রান্ত ব্যক্তি চিহ্নিত হয়েছে পৃথিবীর অন্তত ১১টি দেশে মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই। বিশ্ব জুড়েই এখন লাল সতর্কতা দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ধান মেলা এই নতুন করোনা প্রজাতি (New Corona variant) B.1.1.529 স্ট্রেন অর্থাৎ ওমিক্রন নিয়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা World Health Organisation (WHO) একে উদ্বেগজনক তালিকাভুক্ত করেছে এই প্রাথমিক গবেষণায় উঠে আসা এই ভাইরাসের সংক্রামক চরিত্রের কারণে। ৯ নভেম্বর প্রথম ধরা পড়ে B.1.1.529 variant দক্ষিণ আফ্রিকার করোনার এক নমুনায়। WHO-কে ২৪ নভেম্বর এই নয়া প্রজাতি নিয়ে জানায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এই ভাইরাসের এই প্রাথমিক গবেষণায় উঠে আসা অতি সংক্রামক চরিত্রের কারণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা , হু একে উদ্বেগজনক তালিকাভুক্ত করেছে।