একজন মানুষের করা এক এমন অপরাধ যার জন্য আদালতে মামলা চলছে এবং সে ঠিক সেই সময় একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটায়, তাও আদালতের বাইরে, তাহলে তাকে আপনি কী বলবেন? একজন ভেগান এক্টিভিস্ট (Vegan Activist) ঠিক এই কাজটাই করেছেন। আসলে এই অ্যাক্টিভিস্ট এর উপর অস্ট্রেলিয়ার একটি সুপার মার্কেটে টপলেস হয়ে প্রতিবাদ করার জন্য একটি মামলা চলছে। ভেগান কর্মীর নগ্ন স্টান্টের জন্য আদালতে কেস ওঠার কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি আবারও আদালতের বাইরে টপলেস হয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন। শুধু তাই নয়, তার অনাবৃত ঊর্ধ্বাঙ্গ -এ লেখা ছিল ‘ডেইরি ইজ রেপ’। যার অর্থ দুগ্ধজাত প্রোডাক্টের ব্যবসা ধর্ষণের সমানুপাতিক।
ভেগান অ্যাক্টিভিস্টের নাম ট্যাশ পিটারসন
‘ডেইলিমেইল ইউকে’-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ভেগান অ্যাক্টিভিস্টের নাম ট্যাশ পিটারসন, যার বয়স প্রায় ২৮ বছর বলে জানা গেছে। তিনি দুগ্ধজাত পণ্য ব্যবহার না করার জন্য মানুষকে সচেতন করেন। ২০২০ সালে পিটারসন একটি সুপার মার্কেটে টপলেস হয়ে জনসমক্ষে প্রতিবাদ করেছিলেন। পাবলিক প্লেসে অর্ধনগ্ন হবার জন্য মামলাটি আদালতে চলছে, যার শুনানির পরই তাশ আবারও আদালতের বাইরে একই কাজের পুনরাবৃত্তি করলেন। ট্যাশ পিটারসনের সাথে আরও দু’জন লোক ছিল, যার মধ্যে একজন মেয়ে এবং আরেকজন ছেলে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই তিনজনই প্রাণী অধিকার কর্মী।
পার্থ ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের বাইরের ঘটনা:
ভেগান কর্মী তাশ পিটারসন মঙ্গলবার পার্থ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বাইরে টপলেস হয়ে যান। তার গায়ে ‘ডেইরি ইজ রেপ’ লেখা ছিল। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমি দুগ্ধ শিল্প নিয়ে সত্য কথা বলার চেষ্টা করছি, দুগ্ধশিল্পের সঙ্গে জড়িত অবলা জন্তুদের বাচ্চাদের জন্য অন্তরাত্মা কাঁদে, তাদের কান্না শোনা উচিত’। তিনি নিজেকে এই প্রতিবাদ করার সময় একজন গাভীর রূপে দেখিয়েছিলেন, এই সময় তিনি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলেছিলেন, ‘গরুদের সাথে অন্যায় হচ্ছে যাতে মানুষই শুধু তাদের দুধ পান করতে পারে।’ শুধু তাই নয়, একটি পোস্টারে তিনি নিজে গরুদের সমর্থনে গাভী রূপ নিয়ে লিখেছিলেন, ‘ওরা আমাকে ধর্ষণ করেছে এবং আমার বাচ্চাদের চুরি করেছে যাতে তোমরা আমার মাংস খেতে পার’।
তার টপলেস পারফরম্যান্স সম্পর্কিত ভিডিওটি তাশ তার ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেছেন। টাশ পিটারসন মঙ্গলবার মিডিয়াকে বলেছিলেন যে তিনি বিশ্বাস করেন না যে প্রতিবাদটি বিশৃঙ্খল ছিল, কারণ তিনি কেবল প্রাণীদের জন্য আওয়াজ তুলেছিলেন এবং অস্ট্রেলিয়ানদের কাছে “সত্য” প্রকাশ করেছিলেন। তারপর তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে তিনি কি মনে করেন যে আদালতের বাইরে তার স্টান্টগুলিকে উচ্ছৃঙ্খল হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে? যার উত্তরে তিনি বলেছিলেন যে ‘আমি বলতে চায়, কিছু লোক এটিকে বিশৃঙ্খল হিসাবে দেখতে পারে কিন্তু প্রত্যেকের নিজস্ব ধারণা রয়েছে যে কোনটা অবৈধ’ আর কোনটা অবৈধ নয়।
ট্যাশ পিটারসন বলেছিলেন যে তিনি উদ্বিগ্ন নন যে তার স্টান্ট তার বিচারের ফলাফলকে প্রভাবিত করেছে কিনা, যা একজন ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে চলছে। তিনি বললেন, ‘আমার কী হবে তাতে আমার কিছু যায় আসে না, আমি এখানে শুধু পশুদের পক্ষে কথা বলতে এসেছি।’ এখানে, আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন করে, প্রতিবাদকারীরা বলেছিলেন যে তারা তাদের শরীরে সৃজনশীলতা দেখিয়েছিল যাতে প্রাণীদের স্বার্থ সম্পর্কিত জিনিসগুলির প্রতি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়। আগামী ৮ এপ্রিল এ বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেট সারা অলিভের পক্ষে শুনানি হবে।