কানে হেডফোন গুঁজে রেললাইনে বসে মোবাইলে গেম খেলার জেরে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ঘটে গেল এক মারাত্বক দুর্ঘটনা। মামা ও ভাগ্নের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল ছুটে আসা নামখানা লোকালের ধাক্কায়। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে শিয়ালদহ শাখার ধপধপি স্টেশনের নিকটবর্তী স্থানে। এমনভাবে দুজন মানুষের প্রাণ হারানোর ঘটনায় এলাকায় নেমেছে শোকের ছায়া।
রবিবার সারা রাত্রিব্যাপী একটি রবার বল টুর্নামেন্ট ধপধপি রেল স্টেশন সংলগ্ন মাঠে চলছিল। সালাউদ্দিন মণ্ডল ও রাকিবুল মোল্লা নামের দুজন ওই খেলা দেখতে গিয়েছিলেন। এর মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর থানার পদ্মেরহাট এলাকার বাসিন্দা সালাউদ্দিন নামের ব্যক্তি। আর অপরজন অর্থাৎ রাকিবুল মোল্লা ঠাকুরের চকের বাসিন্দা। তাঁরা দু’জন সম্পর্কে মামা ও ভাগ্নে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সালাউদ্দিন ও রাকিবুল খেলা চলাকালীন কানে হেডফোন লাগিয়ে রেললাইন উপর বসেছিলেন। দু’জনেই ব্যস্ত ছিলেন মোবাইল গেমে। তখন ঘড়ির কাঁটায় সন্ধে সাতটা হবে। যখন মন দিয়ে মামা ও ভাগ্নে মোবাইলে গেম খেলছিলেন সেই সময় আপ নামখানা লোকাল আসার সময় আর ট্রেন নির্ধারিত সময় মতোই চলে আসে। ঘটনাস্থলেই ওই ট্রেনের ধাক্কায় মামা ও ভাগ্নে প্রাণ হারান। খবর পেয়ে রেলপুলিশ বারুইপুর থেকে ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তারা ময়নাতদন্তে পাঠায় দেহ দু’টি উদ্ধার করে। পদ্মেরহাট ও ঠাকুরের চক এলাকায় মর্মান্তিক ঘটনায় নেমেছে শোকের ছায়া।
দু’দিন আগে কিছুটা একই রকম ভাবে হাওড়াগামী মেদিনীপুর লোকালের ধাক্কায় প্রাণ হারিয়েছেন পিকনিক করতে আসা দুই যুবক। তাদের মধ্যে একজনের নাম মুস্তাক আলি খান আর আরেকজন এর নাম আবির গায়েন। তারা মেদিনীপুর সদর ব্লকের হাতিহলকা ও রাজারবাগানের বাসিন্দা ছিলেন। শনিবার মেদিনীপুরের রাঙামাটি রেলব্রিজের নিচে পিকনিক করতে এসে সেলফি তুলতে রেলব্রিজে ওঠেন তাঁরা। আর সেই ওঠাই কাল হয়ে দাঁড়ায়। রেলট্রাকের উপর দাঁড়িয়ে সেলফি তোলার সময় হাওড়াগামী একটি লোকাল ট্রেনের ধাক্কা খায় ওই দুই যুবক। ঘটনাস্থলেই মারা যায় দু’জন।
সেলফি তুলতে গিয়ে দুর্ঘটনা এই প্রথম নয়। ভারতে বারবার সেলফির নেশায়, কানে হেডফোন লাগিয়ে লাইন পার হতে গিয়ে বা রেল লাইনে বেখেয়ালে বসে প্রাণ হারায় অনেকে, ঘটছে দুর্ঘটনা। হয়েছে প্রাণহানি। বহু প্রচার সত্বেও মানুষের সচেতনতা ফেরেনি। আবারও ঘটে গেল এমন দুর্ঘটনা।