মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকলো মালদা। শিশু জন্মের পর সদ্যোজাতকে আশীর্বাদ এর বিনিময়ে টাকার দাবি পূরণ করতে মাত্র কুড়ি দিন বয়সী শিশুকে মায়ের থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়ে তিনঘণ্টা আটকে রাখার অভিযোগ বৃহন্নলার বিরুদ্ধে। জানা যায় তিন ঘণ্টা পর সদ্যোজাতকে ফেরত দিলে সে মারা যায়। ঘটনায় গ্রেফতার অভিযুক্ত। মালদার মানিকচক থানা এলাকার ঘটনা এটি।
আজও শিশু জন্ম নিয়ে বাড়িতে আসা মাত্রই হাজির হয়ে যায় বৃহন্নলা। এটি বাংলার বহু অঞ্চলের একটি পুরনো রীতি। অনেকের অভিযোগ আশীর্বাদ নিয়ে সামর্থ্য মতন টাকার জায়গায় নবজাতকের পরিবারের কাছ থেকে চাপ দিয়ে টাকা আদায় করেন বেশিরভাগ বৃহন্নলা। কিন্তু মালদহের মানিকচকে টাকা আদায়ের কারণে যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল, তা অতীতের সব অভিযোগকেই ছাপিয়ে গেল।
স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, বাঙালগ্রামের বাসিন্দা এক মহিলা মাম্পি মাঝি গত ২৯শে অক্টোবর মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জন্ম দেন তিন সন্তানের। হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়ে নিজের তিন সদ্যোজাত সন্তানকে নিয়ে বাড়িতে ছিলেন তিনি। বুধবারই মাম্পি মাঝির বাড়িতে আশীর্বাদ দিতে হাজির হন স্থানীয় এক বৃহন্নলা। তাঁর বাড়িতে গিয়ে প্রথমেই ১২০০ টাকা চেয়ে বসে সে। কিন্তু পরিবারের লোকজন জানায় ৩০০ টাকা দিতে রাজি তারা। কিন্তু এতে ওই বৃহন্নলা মানতে চান না। জানা গেছে এরপরই ওই শিশুকে মায়ের কোল থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়ে তিনঘণ্টা আটকে রাখে সে নিজের কাছে। তারপরই জোরে জোরে ঢোল বাজাতে থাকে। এমনকি মা কে দুধ খাওয়াতেও দেওয়া হয়নি শিশুটিকে। আর এই সব কিছুই হয়েছে দাবী মত বারোশো টাকা দিতে অস্বীকার করাতেই দীর্ঘক্ষণ ওই শিশুকে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ। এমনকি ফোনে এক আশা কর্মী শিশুটিকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতে বলেন ওই বৃহনল্লাকে। ওই আশা কর্মীকেও সেই বৃহনল্লা হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। আর জানা যায় তার মধ্যেই মৃত্যু হয় ওই সদ্যোজাতর। খেতে না পেয়ে এবং ঢোলের আওয়াজে ওই কুড়িদিনের শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ।
এই নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। ঘটনার খবর পেয়ে ওই বাড়িতে ছুটে যান মানিকচক থানার পুলিশ। অভিযুক্ত বৃহনল্লা এর বিরুদ্ধে মানিকচক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।