হিন্দু মন্দিরে সাধারণত হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন আরাধ্য দেবদেবীর মূর্তি প্রতিষ্ঠা ও পুজো হওয়া খুব সাধারণ ব্যাপার। কিন্তু ভারতের বুকেই এমন একটি মন্দির রয়েছে যেখানে পূজিত হন সারমেয়। মন্দিরে সাড়ম্বরে ঘটা করে চলছে কুকুরের পুজো? কিন্তু এমন আশ্চর্য কুকুর পুজোর রীতি কোথা থেকে এলো। কেনই বা এই মন্দিরের মূল আরাধ্য দেবতা কুকুর। এর পেছনে লুকিয়ে আছে এক গল্প।
ছত্রিশগড় রাজ্যের দুর্গ জেলার খপড়ি গ্রামে রয়েছে এই সারমেয় দেবতার মন্দির। মনে করা হয় এই মন্দিরটি নাকি তৈরি করা হয়েছে ১৪ থেকে ১৫ শতক নাগাদ কোনো এক সময়। মন্দিরের চূড়াটি তৈরি হয়েছে সাপের আদলে। জানা যায় একসময় এই গ্রামে যাযাবর সম্প্রদায় বসবাস করতেন। তাদের মধ্যে একজনের কাছে একটি পোষ্য কুকুর ছিল। একসময় মারত্মক অর্থাভাবে, কুকুরটিকে সুদের কারবারির কাছে বন্ধক রাখেন তার মালিক।
সেই সুদের কারবারির বাড়িতে এক রাতে চোর ঢুকে যায়। তবে কুকুরটির কাছ থেকে বাঁধা পেয়ে চোর চুরি না করতে পেরে, নিজের সমস্ত সম্পত্তি পাশে একটি পুকুরে রেখে পালায়। কুকুরটিই যাবতীয় সম্পত্তি উদ্ধার করতেও সহায়তা করে। কুকুরটির বিশ্বাসযোগ্যতা , নিষ্ঠা ও ভালোবাসে দেখে ওই সুদের কারবার করা ব্যক্তিটি ওই কুকুরটিকে মুক্তি দিয়ে দেন।
আর ওই কুকুরটিকে তিনি কেন মুক্তি দেন সে কথা জানিয়ে একটি কাগজে লিখে ঐ তার গলায় বেঁধে দেন। মুক্তি পেয়ে কুকুরটি পথ চিনে নিজের মালিকের বাড়ী চলে এল। কুকুরের আসল মালিক কুকুরটিকে দেখতে পেয়ে মনে করেন সে পালিয়ে এসেছে। রাগে তিনি কুকুরটিকে মারতে উদ্যত হন। লাঠি দিয়ে পিটিয়ে কুকুরটিকে হত্যা করার পর, তিনি সেই কাগজটা দেখতে পান যেখানে সুদের কারবারি সমস্ত কিছু লিখে দিয়েছিল। এরপরই নিজের ভুল বুঝতে পেরে শোক পান সেই ব্যাক্তি। কুকুরটির স্মৃতি রক্ষার্থে বানান এই মন্দির।
এরপর থেকেই ওই মন্দিরে পুজো হয়ে আসছে। গ্রামবাসীদের বিশ্বাস এই মন্দিরে পুজো দিলে কুকুর সম্প্রদায় তাদের রক্ষা করবে , কামড়াবে না এবং জলাতঙ্কও হবে না।