ঋণের টাকা ফেরাতে পারেননি। আর এই কারণেই এক দলিত যুবককে পায়ে বেড়ি পরিয়ে বেঁধে রাখা হল গোয়াল ঘরের মধ্যেই। সেখানেই শিকল বাধা অবস্থায় পড়ে থাকলো সেই দলিত যুবক প্রায় ৩১ ঘণ্টা। এখানেই শেষ হয়নি এই ঘটনা, ওই যুবককে শিকল বাধা অবস্থাতেই প্রচন্ড মারধরও করা হল। এই ঘটনায় ছ’জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে রাজস্থানের বুন্দি জেলায়।
শঙ্কর লালা বুন্দির পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট জানিয়েছেন , রাধেশ্যাম মেঘওয়াল নামের ওই অত্যাচারিত দলিত যুবকটি পরমজিৎ সিংহ নামে এক জন খামার মালিক ও তাঁর ভাই এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন যে তারা মিলে তাঁকে গোয়ালে বন্দি করে রাখেন অপরহণ করে। ওই দুজনের সাথে আরও চারজন এই অপহরণ ও অত্যাচারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
রাধেশ্যাম জানিয়েছেন, ‘‘বছর তিনেক আগে তিনি আমাকে কাজে নিয়োগ করেন ৭০ হাজার টাকা বার্ষিক চুক্তির ভিত্তিতে। তখন আমি বিপদে ছিলাম, টাকার প্রয়োজন ছিল, বোনের বিয়ের কারণে হাজার তিরিশেক টাকা ধার নিয়েছিলাম। কিন্তু এভাবে একটানা ৬ মাস ধরে ২৪ঘন্টা কাজ করতে করতে রীতিমতো অসুস্থ হয়ে যাচ্ছিলাম আমি। আর তাই আমি কাজ ছেড়ে দিই।’’
তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘‘ আমার কাছে তাঁরা ঋণের টাকা ফেরত চেয়ে চাপ দিতে থাকেন কাজ ছাড়ার পর থেকে। আমায় তারা বলতে থাকে যে , ঋণের পরিমাণ এক লক্ষ টাকা হয়ে গিয়েছে সুদে আসলে।’’ তিনি পরমজিৎকে ২৫ হাজার টাকা ফেরত দেন কাজ ছেড়ে দেওয়ার পর বলে জানিয়েছেন রাধেশ্যাম। অভিযোগ, হঠাৎ করেই একদিন এর মধ্যে রাধেশ্যামকে একপ্রকার জোর করেই তাঁর নিজের বাড়ি থেকে পরমজিৎ ও তাঁর ভাই এসে তুলে নিয়ে যায় একটানা ১০ দিন তাদের জমিতে তাঁকে দিয়ে কাজ করান।
অভিযোগ, তাঁকে একটি চায়ের দোকান থেকে গত ২২ মে জোর করে তুলে নিয়ে যান পরমজিৎ, তাঁর ভাই এবং আরও চার জন। একটি গোয়ালে তাঁকে একটি শিকল পায়ে বেঁধে দিয়ে প্রচন্ড মারধর করা হয়। টানা ৩১ ঘন্টা তাঁকে সেখানেই আঁটকে রাখা হয়।
রাধেশ্যামের ভাই পরমজিৎদের কাছে গিয়ে অনুরোধ করতে থাকে যাতে তারা রাধেশ্যাম কে ছেড়ে দেয়, আর এই আবেদন জানানোর পর তাঁরা রাধেশ্যামের ভাইয়ের থেকে এক লক্ষ ১০ হাজার টাকা দাবি করে। অবশেষে উপায় না পেয়ে একপ্রকার বাধ্য হয়েই তাঁর ভাই অন্য এক জমিমালিকের কাছে ৪৬ হাজার টাকা নিয়ে রাধেশ্যামকে মুক্ত করেন ।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে কে , অভিযোগকারীর দাবি সঠিক। অভিযুক্তরা ঘটনার পর থেকে পলাতক।