এই পৃথিবীর সব থেকে ভয়ঙ্কর সিরিয়াল কিলার এর কাহিনী জানেন। না কোনো মানুষ নয়, নয় কোনো দৈত্যাকার প্রাণীও। কেনোনা মানুষ মারার নিরিখে পৃথিবীতে সবচেয়ে উপরে যেই প্রাণীটি নাম রয়েছে তা আর কেউ নয় এক রয়াল বেঙ্গল টাইগার। এতটাই ভয়ঙ্কর এই বাঘের ত্রাস যে এর আতঙ্কে খালি করে দেওয়া হয়েছিল জনপদ। হঠাৎই হিংস্র হয়ে ওঠা এই বাঘিনীর এত বিপুল সংখ্যায় মানুষ হত্যা করেছিল যে এই চম্পাওয়াত খ্যাত রয়্যাল বেঙ্গল বাঘিনীটির নাম ‘গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড’-এও আছে। সাধারণত, জন্মগত শিকারী হয় বাঘেরা। এবং সারা পৃথিবী জুড়েই নানা ভয়ঙ্কর পরিসংখ্যানও রয়েছে তাদের অন্যান্য প্রাণী এবং মানুষকে হত্যা করার। ভীষণ শক্তিশালী এই প্রাণী এক থাবায় মানুষের খুলি পর্যন্ত ভেঙে দিতে পারে।
তেমনই ১৯ শতকের দিকে এক বাঘিনী এতটাই হিংস্র হয়ে উঠেছিল। এমনিতে ভীষন বুদ্ধিমান ও প্রতিহিংসাপরায়ণ হয় বাঘেরা। কিন্তু এই বাঘিনীর মানুষের প্রতি হিংস্র হয়ে ওঠার কারণ তার স্মৃতিতে থেকে যাওয়া এক শিকারী। বহুকাল আগে কুমায়ূনে, একটি বাঘিনীকে একজন শিকারী গুলি করেছিলেন, কিন্তু তিনি বাঘিনীটিকে পালাতে দিয়েছিলেন হত্যা না করে। জঙ্গলে আহত সেই বাঘিনীটি লুকিয়েছিল ।তবে তার মানুষের প্রতি ঘৃনা মধ্যে জন্ম নেয়, বাঘিনীটি সেখান থেকে চলে গেলেও। পরে বাঘিনীটি প্রবেশ করে সেই শিকারীর কেবিনে বদলা নিতে। কিন্তু সেই সময় কেবিনে ছিলেন না শিকারী। ফলে বাঘিনীটি তার ফেরার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। অন্যদিকে তিনি ঘুনাক্ষরেও টের পাননি যে বাঘিনীটি তার ফেরার পর অপেক্ষা করছে । কেবিনে ঢোকা মাত্রই বাঘিনী তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। মারণ থাবা চোখের পলকে নেমে আসে । শিকারীকে নিজের সবটুকু দিয়ে প্রতিরোধ করার পরেও হার মানতে হয়েছিল। বাঘিনীটি প্রথমবার মানুষের রক্তের স্বাদ পেল। ‘ দ্য ম্যান ইটার অফ কুমায়ুন’ জন্ম নিলো।
নেপাল ও ভারতের কুমায়ুন অঞ্চলে চলে হত্যালীলা ১৯ শতকের শেষ থেকে বিংশ শতাব্দীর প্রথম বছর পর্যন্ত। বাঘিনীটি প্রায় ৪৩৬ জন মানুষের প্রান কেড়ে নেয়। ইতিহাসের পাতায় বাঘিনীর হামলার হত্যার এই পরিসংখান জায়গা করে নেয় । জিম কর্বেট মানব হত্যার এই শৃংখল শেষ পর্যন্ত ভাঙতে সক্ষম হয়েছিলেন। বাঘিনীটিকে ১৯০৭ সালে তিনি গুলি করে হত্যা করেছিলেন। পোস্টমর্টেমের পর জানাগিয়েছিল ,মুখের ডান দিকের ওপরের এবং নিচের চোয়ালের দাঁতগুলো ভাঙা বাঘিনীর । কিছু হাড় ভেঙে গিয়েছে মুখের ওপরের অংশের। সেই শিকারীর গুলি করার ফল এসব কিছুই। বাঘিনীটি মানুষ শিকার করতে সেই কারণেই শুরু করেছিল। কারন শিকার করা সহজ মানুষকে। এছাড়া সম্পূর্ণ সুস্থ ছিল বাঘ এবং ১০-১২ বছর বছরের মধ্যে তার বয়স ছিল।