Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
FEATURED ট্রেন্ডিং বিনোদন

এমনও দিন গেছে শুধু জল খেয়ে রেকর্ডিং করেছেন! ফিরে দেখা কিংবদন্তি লতা মঙ্গেশকরের জীবন!

কোকিল কণ্ঠী লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যুর খবর সঙ্গীতপ্রেমীদের স্তব্ধ করে দিয়েছে। যার প্রেমে ভরা গান সবার মুখে হাসি এনেছে, আজ সেই গানগুলো সবার চোখ ভিজিয়ে দিচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন লতা মঙ্গেশকর আর আমাদের মাঝে নেই। স্মৃতি চারণায় ফিরে দেখা কিংবদন্তি গায়িকার জীবন।

ইন্দোরে ১৯২৯ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন লতা। লতা মঙ্গেশকর ছিলেন সবচেয়ে বড় পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে। পণ্ডিত দীনানাথ মঙ্গেশকর তাঁর বাবা মরাঠি ও কোঙ্কিণী সংগীত শিল্পী ছিলেন, পাশাপাশি অভিনয়ও করতেন। ছোটবেলায় কে এল সায়গল ছাড়া বাড়িতে আর কোনও ছবির গান গওয়ার অনুমতি ছিল না। লতা মঙ্গেশকরের জীবনের প্রথম নাম হেমা। বাবার “ভাব বন্ধন” নাটকে “লতিকার” চরিত্রে প্রভাবিত হয়ে, আগের নাম হেমা থাকলেও হেমার নাম বদল করে রাখা হয় লতা।

লতা মঙ্গেশকর খুবে কষ্টে বড় হয়েছেন তার শৈশব কালে। মাত্র ১৩ বছর বয়সে গায়িকা নয় অভিনেত্রী হিসাবে কাজ করেছিলেন লতা মঙ্গেশকর। সেইসময় গায়িকা বাবাকে হারান, ওই বয়সেই হাল ধরেন সংসারের পাঁচ ভাই-বোনের কথা ভেবে। ২৫ টাকা লতাজির প্রথম উপার্জন ছিল । লতা ২৫ টাকা উপার্জন করেছিলেন প্রথম বার মঞ্চে গাওয়ার জন্য। ১৯৪৪ সালে লতা মারাঠি ছবি ‘কিটি হাসাল’ এর জন্য প্রথম গান গেয়েছিলেন।

যতীন মিশ্রর বই, “লতা সুর গাথা”তে লতাজি বলেছেন, “ভীষণ ক্লান্ত হয়ে পড়তাম আমি প্রায়ই রেকর্ডিং করতে করতে আর ভীষণ খিদে পেত আমার। তখন ক্যান্টিন থাকতো রেকর্ডিং স্টুডিওতে, তবে নানা রকম খাবার পাওয়া যেত কি না? আমার সে বিষয়ে মনে নেই। তবে চা-বিস্কুট খুঁজে পাওয়া যেত তা বেশ মনে আছে। সারাদিনে এক কাপ চা আর দু চারটে বিস্কুট খেয়েই সারাদিন কেটে যেত। এমনও দিন গেছে যে দিন সারাদিন রেকর্ডিং করছি শুধু জল খেয়ে , কাজের ফাঁকে মনেই আসেনি যে কিছু খাবার খেয়ে আসতে পারি ক্যান্টিনে গিয়ে। সারাক্ষণ মাথায় এটাই ঘুরতো যেভাবে হোক নিজের পরিবারের পাশে আমাকে দাঁড়াতে হবে।”

ঠিক ৮০ বছর আগে লতাজির গানের সফর শুরু হয়েছিল। একটি মারাঠি ছবির সৌজন্যে ১৯৪২ সালে প্রথম গান রেকর্ড করেন তিনি। পরের বছর ‘মাতা এক সুপুত কি দুনিয়া বদল দে তু’ গানটি মরাঠি ছবি ‘গাজাভাউ’-এর জন্য রেকর্ড করেন লতা মঙ্গেশকর, তাঁর প্রথম হিন্দি গান এটি ছিল। এক হাজারেরও বেশি হিন্দি ছবিতে সুর সম্রাজ্ঞী গান গেয়েছেন। ভারতের একজন স্বনামধন্য গায়িকা ছিলেন তিনি। তিনি গানে রেকর্ড গড়ে ছিলেন। একমাত্র তিনিই ভারতের ৩৬টি আঞ্চলিক ভাষাতে ও বিদেশি ভাষায় গান গেয়েছিলেন।

তিনি ভারতরত্ন (২০০১), পদ্মবিভূষণ (১৯৯৯), দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার (১৯৮৯), মহারাষ্ট্রভূষণ পুরস্কার (১৯৯৭), এনটিআর জাতীয় পুরস্কার (১৯৯৯), পদ্মভূষণ (১৯৬৯) সালে পেয়েছিলেন গান গেয়ে। দেশের সর্বোচ্চ অসমারিক নাগরিক সম্মান ভারতরত্ন ২০০১ সালে প্রদান করা হয়েছিল লতা মঙ্গেশকরকে। ফ্রান্স তাদের দেশের সর্বোচ্চ অসামরিক পুরস্কার (অফিসার অফ দি লেজিয়ান অফ অনার) ২০০৭ সালে দিয়ে সম্মানিত করে লতা মঙ্গেশকরকে। তিনি সুরের সরস্বতী আক্ষরিক অর্থেই। সঙ্গীতের সঙ্গে যুক্ত তাঁর ভাই ও বোনেরা সকলেই। শোকস্তব্ধ সঙ্গীতমহল থেকে সকলে গায়িকার মৃত্যুতে।

Related posts

ভারতে করোনায় হ্রাস পেল দৈনিক সংক্রমণ, মৃতের সংখ্যা পাঁচশোর নীচে

News Desk

২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই ঊর্ধ্বমুখী দেশের কোভিড গ্রাফ, পড়ুন সম্পূর্ন রিপোর্ট

News Desk

প্রেমিকার সঙ্গে লিভ-ইনের খরচ বিশাল! টাকার জন্য অদ্ভুত পথ বাছলেন প্রেমিক, তারপর..

News Desk