এবছর দূর্গা পুজোয় পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট সাহায্য করেছে যাত্রীসাধারণ কে। কিন্তু বেলাগাম ভিড় করা পুজোর প্রতিদিন যেন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছিল। এবার এই ভিড়ে লাগাম দিতে বড়সড় সিদ্ধান্ত নিলো পূর্ব রেলওয়ে। সেই সিদ্ধান্ত হলো যে বিধাননগর স্টেশন এ কোনো ট্রেন দাঁড়াবেনা, এরকমই নির্দেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের। এই নির্দেশিকা জারি থাকবে আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার নবমীর দিন বিকেল ৪টে থেকে দশমীর ভোর ৪টে পর্যন্ত বিধাননগরে। আসলে বিধাননগরে শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব এর দুর্গাপুজোর বিশাল আকর্ষণ বুর্জ খালিফার জন্যই এই মারাত্বক হাড়ে ভিড় বলে মনে করা হচ্ছে। রেলওয়ে থেকে এরকম একটা সিদ্ধান্ত এই ভীড়কে রুখতে।
এ প্রসঙ্গে একলব্য চক্রবর্তী পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক এক বাংলার সংবাদ মাধ্যম কে বলেন, ‘অতিরিক্ত ভিড় এড়াতে করোনা আবহে বিধাননগর স্টেশনে কোনও ট্রেন দাঁড়াবে না আজ বিকেল ৪টে থেকে আগামীকাল ভোর ৪টে পর্যন্ত।’ এই যাত্রীচাপ শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের বুর্জ খলিফার (Burj Khalifa) জেরে হচ্ছে বলে তিনি সরাসরি না স্বীকার করলেও তাঁর ইঙ্গিত যে সেদিকেই ছিল, তা বলা বাহুল্য।
উল্লেখ্য, মূলত কলকাতায়, পশ্চিম বাংলায় মফস্সল এলাকা এবং শহরতলী থেকে ঠাকুর দেখতে এলে অন্যতম পথ বিধাননগর স্টেশন। এই স্টেশনে নেমেই লেকটাউন অভিমুখী হচ্ছিলেন দর্শনার্থীরা বুর্জ খলিফা পুজো মণ্ডপ দেখতে। অতিরিক্ত ভিড় হচ্ছিল সেই থেকেই স্টেশনে। এবার যা নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা নিল কর্তৃপক্ষ। কেবলমাত্র ট্রেন না দাঁড়ানোই নয়, শিয়ালদা শাখার নবমী-দশমী স্পেশ্যাল নাইট ট্রেনও বাতিল করা হয়েছে। রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করেই এই স্পেশাল নাইট সার্ভিস ট্রেন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। অষ্টমী, নবমী ও দশমীর জন্য শিয়ালদা শাখার বনগাঁ, রানাঘাট, ডানকুনি, বারুইপুর ও বজবজ সহ মোট পাঁচ ডিভিশনে সাতজোড়া স্পেশ্যাল নাইট সার্ভিস ট্রেন চালু করা হয় এর আগে। কিন্তু, শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবে দর্শকদের ভিড়ের চাপে ঢোকা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরেই পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্তের দিকেই তৎপর হয়। তড়িঘড়ি নাইট সার্ভিস স্পেশ্যাল বন্ধ করার সিদ্ধান্তের পাশাপাশি বিধাননগর স্টেশনে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ট্রেন না দাঁড়ানোর।
ইতিমধ্যেই পূর্ব রেলের এই ট্রেন বাতিলের বিজ্ঞপ্তি সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে কলকাতা পুলিশের তরফে।
অন্যদিকে, এক আলাদাই উন্মাদনা তৈরি হয়েছিল প্রথম থেকেই মন্ত্রী সুজিত বসুর (Sujit Basu) এই পুজোকে ঘিরে উৎসবপ্রিয় মানুষের মধ্যে। করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে তুলছিল দিন দিন বেড়ে চলা জনপ্লাবনে। অবশেষে বাড়তি ঝুঁকি না নিয়ে দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হল এই মণ্ডপে। অষ্টমী শেষে মধ্যরাতে নিজেই এ কথা ঘোষণা করেন প্রধান পৃষ্ঠপোষক সুজিত বসু একটি সাংবাদিক বৈঠক করে। ভিড় যেন সব রেকর্ড ছাপিয়ে যায় অষ্টমীর বিকেল থেকে। কার্যত লেকটাউন-উল্টোডাঙা চত্বরের যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে পড়ে। আর এবার দর্শনার্থীদের জন্য মণ্ডপের দরজাই বন্ধ করে দেওয়া হল।