মিস ইউনিভার্স আর অভিনেত্রী সুস্মিতা সেন বরাবরই স্বাস্থ্য সচেতন। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে মাঝে মধ্যেই পোস্ট করেন নানা ফিটনেস বিষয়ক ভিডিও। কিন্তু সুস্বাস্থ্যের অধিকারী সুস্মিতা সেনই একসময় আক্রান্ত ছিলেন এক বিরল রোগে।
কয়েকদিন আগেই অভিনেত্রী সুস্মিতা সেন জানান, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল এই চার বছর ছিল তার জীবনের ভীষণ কঠিন এক সময়। কারণ অ্যাডিসন (Addison) নামক এক বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। আক্রান্ত হওয়ার আগে তার কোনো ধারণা ছিল না এই রোগ সম্পর্কে। এই বিষয়ে বলতে গিয়ে সুস্মিতা সেন জানান, ‘ওই দিনগুলো আমার ভীষণ কষ্টে কেটেছে।’ এই রোগের কারণে তাকে নিয়মিত স্টেরয়েড নিতে হত। এর কারণে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া শিকার হতে হত তাকে।
অ্যাডিসন হচ্ছে এমন এক হরমোনাল রোগ যেখানে অ্যাড্রিনালিন গ্রন্থি সঠিক ভাবে হরমোন তৈরী করতে পারে না। সেই সঙ্গে শরীরে কর্টিসোল হরমোনও প্রয়োজনীয় পরিমাণে উৎপাদিত হয় না। অ্যালডোস্টেরন উৎপাদনেও হয় সমস্যা। আর এই সমস্ত কারণে মানব দেহের কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই রোগের লক্ষণ খুব ধীর ভাবে প্রকাশ পায় যার কারণে একে সনাক্ত করা সহজ নয়। অথচ তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু না হলে এই রোগের কারণে ভীষণ ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। ভীষণভাবে ক্লান্ত অনুভব হওয়া ত্বক কালচে হয়ে যাওয়া, ওজন বেড়ে যাওয়া, নিন্ম রক্তচাপ এবং লবণ খাওয়ার প্রবণতা ইত্যাদি বাড়তে থাকে। এর পাশাপাশি কমতে থাকে শরীরের ইমিউনিটি।
অ্যাডিসন রোগের সাথে তাঁর লড়াইয়ের কথা বলতে গিয়ে সুস্মিতা সেন জানান, ‘২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যখন আমি জানতে পারি আমি এই রোগে আক্রান্ত তখন আমি ভীষণ ভেঙে পড়েছিলাম। আরও চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম যখন জানতে পারি এটি শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর প্রভাব ফেলে। কিন্তু ভেঙ্গে পড়লে তো হবে না, রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মনকে তো শক্তিশালী করতেই হবে। আর সেই রোগের সাথে লড়াইয়ে নিয়মিত শরীর চর্চার ফলেই সুস্মিতা সেন এই বিরল রোগকে হারিয়েছিলেন। নানচাকু নিয়ে ওয়ার্কআউটই ছিল এই রোগ প্রতিরোধে সর্বাধিক কার্যকরী। এবং নিয়মিত এই ওয়ার্কআউট করেই এখন সুস্থ আছেন সুস্মিতা। তবে এই নান চাকু ওয়ার্কআউট প্রশিক্ষণ ছাড়া করা যায় না। আর এর জন্য সুস্মিতা বিশেষ কৃতজ্ঞ তাঁর ট্রেনার নূপুর শিখরের কাছে।