কঠিন অধ্যাবসায় থাকলে কি না হয়। আজকে এই প্রতিবেদনে একটি পরিবারের সাথে আপনার পরিচয় করিয়ে দিতে যাচ্ছি যাদের প্রবল ইচ্ছাশক্তির বিষয়ে জানলে অবাক হবেন। এরা হৃদয়ে ধনী কিন্তু আর্থিকভাবে দরিদ্র।
এই গল্পটি ঝুনঝুনুর একটি দরিদ্র পরিবারকে নিয়ে, যারা বঞ্চনার মধ্যে দিন কাটিয়েছে এবং কখনও কঠিন সংগ্রামের মধ্যে হাল ছাড়েনি। এর ফলেই সাফল্য তার ঝুলিতে এসেছে। অনিলের বয়স তখন মাত্র ৭ বছর, যখন তার বাবার ছায়া মাথা থেকে সরে যায়। এই বয়সেই পিতৃহীন হয় সে। এই কারণে তার ভাই, যে অনিলের চেয়ে মাত্র ৪ বছরের বড়, তাকে তার পড়াশোনা ছেড়ে দিতে হয়েছিল এবং মা সাফ সাফাইয়ের কাজ করে সংসারের খরচ চালানোর চেষ্টা করেছিলেন। বড় ভাই দেখলেন শুধু মায়ের পরিশ্রমে ঘর চালানো যাচ্ছে না। তাই মাত্র ১১ বছর বয়সে সে শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেন।
আর এইভাবেই এই মা-ছেলে মিলে তাদের আদরের ছোট অনিলের লেখাপড়া চালিয়েছে। তাকে তারা বলেন, পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই এবং মানবতার চেয়ে বড় কোনো ধর্ম নেই। এসবের ফলশ্রুতিতে অনিল আজ স্বায়ত্তশাসিত সরকারি বিভাগে জেইএন হয়েছেন।
১২ ক্লাস পাস করার পর অনিলকে আইআইটি পরীক্ষা দিতে হয়েছিল। এই পরিবারটি অনেক কষ্টে ফর্ম এবং ফি জোগাড় করেছে। কিন্তু মা ও ভাইয়ের পরিশ্রম কে মূল্য দিয়ে অনিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি কুরুক্ষেত্র থেকে বি.টেক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। পার্ট টাইম চাকরি করে, বই কিনে, ফি দিয়ে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করে। মোটা কোচিং ফি’র টাকা ছিল না মায়ের। কিন্তু এই পরিবারই কোনোমতে অনিলকে কোচিংয়ে ভর্তি করিয়ে দেয়। দিল্লিতে থাকা এবং কোচিং করতে বছরে ২ লক্ষ টাকা খরচ হত। এত টাকা জোটাতে না পেয়ে অনিল একটা বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। কোচিং ফি দেওয়া হতো সেই মাইনের টাকায়। এরপর প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কৃতকার্য হন।