বাচ্চাদের মধ্যে বেশ কয়েক বছর ধরেই মোবাইল গেমিং বা অনলাইনে গেম খেলার প্রবণতা খুব বেড়েছে। আর তেমনই এক ছাত্রের প্রচন্ড অনলাইন গেমের নেশা আর এই গেমের চক্করে খুইয়ে বসেছে বেশ কয়েক হাজার টাকা। তার বাড়িতে তাকে প্রচন্ড বোকা দেওয়া হয় আর সেই অভিমানেই কলকাতার দ্বিতীয় হুগলি সেতু থেকে ওই স্কুল পড়ুয়া ঝাঁপ দিতে গিয়েছিলো গঙ্গায়, সে ভেবেছিলো গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করবে। সেখানে উপস্থিত এক এনভিএফ কর্মী ও কাছেই হেস্টিংস থানার তৎপরতায় বেহালা এলাকার বাসিন্দা ওই স্কুল পড়ুয়ার।
প্রায় হাজার দশেক টাকা খুইয়েছিল ওই ছাত্র অনলাইন গেম খেলতে গিয়ে। বাড়িথেকে এই কারণে প্রচন্ড বকাঝকা করা হয় আর তাতেই সেই স্কুল পড়ুয়ার মন ভেঙে যায়। কিন্তু এই আত্মহত্যা করার মুহূর্তে এক এনভিএফ কর্মী সেই সেখানে উপস্থিত থাকার কারণে ওই স্কুল ছাত্রকে বাঁচানো গেছে।
জানা গিয়েছে, একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্র টালিগঞ্জের (Tollygunge) বাসিন্দা। আচমকা দ্বিতীয় হুগলি সেতু থেকে রবিবার দুপুর ২ টো নাগাদ ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে সে। আর তা এক এনভিএফ কর্মী দেখে ফেলেন। তৎপরতার সাথে পুলিশে খবর দেয় সে। পুলিশ গিয়ে ওই ছাত্রকে উদ্ধার করে। তারপরই পুলিশ ওই ছাত্রের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেন। তারপর ওই ছাত্রকে তার পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছেন। স্বরূপ সেতুয়া এনভিএফ কর্মী জানিয়েছেন, আমি দেখলাম ওই ছাত্র দ্বিতীয় হুগলি সেতুর রেলিং-এর ধারে চলে এসেছে, তখন ছুটে যাই। সাথে সাথেই হেস্টিংস থানাকে খবর দিই।
পুলিশের তরফ থেকে আত্মঘাতী হতে যাওয়া এই বেহালার স্কুল পড়ুয়াকে কাউন্সেলিং করানোর পর প্রাথমিক তদন্তে যা জানতে পেরেছে তা হল– ওই কিশোরের মধ্যে গত কয়েকমাস ধরেই আসক্তি দেখা যাচ্ছিল অনলাইন গেমে। এজন্য সে তার পরিবারের সদস্যদের থেকে বিভিন্ন সময়ে বকাঝকাও খেত বলে জানা গিয়েছে। একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্র টালিগঞ্জের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের পড়ুয়া, ওই ছাত্র বাবার অ্যাকাউন্ট থেকে বাবাকে না জানিয়ে টাকা তোলে একটি অনলাইন গেমে এন্ট্রি নেওয়ার জন্য। যদিও সেই গেমে সে হেরে যায়। আর এই কারণে মানসিক অবসাদেও ভুগছিলো ওই ছাত্র। পাশাপাশি বাড়ির থেকে বকাঝোকাও খাচ্ছিল। আর এই সব মিলিয়ে সে মানসিক ভাবে ভেঙে পরে। আর আজ, রবিবার সে দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে চলে আসে তারই জেরে। এবং ঝাঁপ দেওয়ার চেষ্টা করে সেখান থেকে। দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে এর আগেও অসমের এক কিশোর ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।