কলেজ পড়ুয়া ছাত্রের কীর্তিতে শোরগোল। নিজের অপহরণের মিথ্যা গল্প ফেঁদে পরিবারের লোকেদের রীতিমতো নাস্তানাবুদ করল সেই পড়ুয়া। আসলে তার প্রচুর টাকার প্রয়োজন এসে পড়েছিল। বহুদিন ধরেই বন্ধুদের কাছ থেকে ধার করে অনলাইনে উড়াচ্ছিল সে। ধারের অংকটা এত বেশি হয়ে দাঁড়িয়েছিল যে কোন উপায় না পেয়ে নিজেরই ভুয়ো কিডনাপিং এর গল্প সাজায় ওই তরুণ। মোটা মুক্তিপণ দাবি করে পরিবারের কাছ থেকে। কিন্তু পুলিশের হস্তক্ষেপে তার এই পরিকল্পনা কাজে আসল না। ফাঁস হয়ে গেল তার কীর্তি।
ঘটনাটি কোচবিহার (Cooch Behar) কোতোয়ালি থানা এলাকার। কলেজ পড়ুয়া ওই তরুণের পিতা পেশায় জামা কাপড়ের ব্যবসায়ী। গত ২৫ মার্চ বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেনি ওই ছাত্র। আচমকাই নিখোঁজ হয়ে যাওয়ায় পরিবারের লোকজন তার খোঁজে নামে চারিদিকে। হঠাৎই বাবাকে ফোন করে জানায় ওই পড়ুয়া যে সে নাকি অপহৃত হয়েছে। দুষ্কৃতীদের হাতে অপহরণ রয়েছে তার, এখন তারা মুক্তি পণ দাবি করছে। মুক্তিপণের অংকটা জানায় সে কুড়ি হাজার টাকা। এও জানায় ওই টাকা তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ফেলে দিলেই চলবে।
কিন্তু ছাত্রের বাবা দ্বারস্থ হয় পুলিশের। পুলিশকে গোটা ঘটনা খুলে জানান তিনি। পুলিশের সন্দেহ হয়। তদন্ত শুরু করে ওই ছাত্রের মোবাইল ফোনের লোকেশন ট্রাক করে সে কোথায় আছে সেটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করে পুলিশ। অবশেষে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা নাগাদ কোচবিহারের বাস স্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের মুখে তরুণ জানায় অনলাই গেম (Online Games) খেলার জন্য বন্ধুদের থেকে কাছ থেকে প্রচুর টাকা ধার করতেন ওই ছাত্র। এইভাবে চলতে চলতে বাজারে প্রায় কুড়ি হাজার টাকা দেনা হয়ে গেছিল তার। কিন্তু কীভাবে সেই টাকা শোধ করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। এদিকে ধার শোধ করার জন্য তার উপর চাপ আসছিল। কোন উপায় না পেয়ে অবশেষে নিজের ভুয়ো অপহরণের গল্প ফাঁদে সে।
পুলিশ তদন্তে জানিয়েছে, মোটর সাইকেল নিয়ে ২৫ মার্চ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন ওই পড়ুয়া। মোটর সাইকেলে এদিক ওদিক ঘুরতে থাকায় তার লোকেশন ট্র্যাক করা কষ্টসাধ্য হচ্ছিল। তদন্তে এও জানা গেছে আশেপাশের বেশকিছু হোটেলেও গেছিলেন থাকতে। কিন্তু তাকে দেখে সন্দেহ হওয়ায় কোন ভোটের মালিক ঘর দেননি তাকে। অবশেষে মঙ্গলবার তাঁর খোঁজ মেলে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ছাত্রের মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত কিছু সমস্যা আছে। তাই তাকে খুঁজে বার করে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।