হিন্দু ধর্মে মৃত্যুর পর মৃতদেহকে দাহ করা হয় এবং মৃত ব্যক্তির দেহ আগুনে দাহ পর তার অস্থিভস্মের ছাই যে কোনো পবিত্র নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। হিন্দু ধর্ম বিশ্বাসীদের মধ্যে এই প্রথা ও ঐতিহ্য বহু শতাব্দী ধরে চলে আসছে, কিন্তু আজ আমরা এমন একটি গ্রামের কথা বলতে যাচ্ছি যেখানে একজন মানুষের মৃত্যুর পর তার হাড় দিয়ে এমন কিছু করা হয় যা বিশ্বাস করা এবং চিন্তা করা আমাদের পক্ষে অসম্ভব। এই গ্রাম ভারতেই এবং রাজস্থানে।
আজ আমরা আপনাকে রাজস্থানের সেই গ্রামের কথা বলতে যাচ্ছি, যেখানকার মানুষরা নদীতে ছাই ফেলা এবং কোনো ধর্মীয় কাজে বিশ্বাস করে না। এই অনন্য গ্রামটি রাজস্থানের চুরু জেলার তারানগর তহসিলে অবস্থিত, যার নাম ‘লাম্বা কি ধনি কি’। মৃত্যুর পর অস্থিভস্ম নদীতে ফেলার বদলে এই গ্রামে
সেগুলো আবার পুড়িয়ে ছাই বানিয়ে দেওয়া হয়।
পুরো গ্রামে মাত্র ১০৫টি ঘর
রাজস্থানের চুরু জেলার এই গ্রামটি খুবই অনন্য, এখানে বসবাসকারী লোকেরা ঈশ্বরে বিশ্বাস রাখে, কিন্তু তা সত্ত্বেও এই গ্রামে একটিও মন্দির নেই। এখানে বসবাসকারী লোকেরা বলে এবং বিশ্বাস করে যে মানুষের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের চেয়ে তাদের কঠোর পরিশ্রম এবং জীবনে উত্সর্গের দিকে বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত। তথ্য অনুযায়ী, ‘লাম্বা কি ধনি কি’ গ্রামে মাত্র ১০৫টি বাড়ি রয়েছে, যার মধ্যে ১০টি বাড়ি মেঘওয়ালদের, ৯১টি বাড়ি জাটদের এবং ৪টি বাড়ি নায়কদের (নানা জাতি)।
এ গ্রামের সকল মানুষ পূজা-অর্চনা ও ধর্মীয় কাজের চেয়ে নিজেদের কাজের প্রতি গুরুত্ব দেয়। গ্রামের মানুষ বলে তাদের কাজই তাদের পূজা। সম্ভবত এই কারণে এখানে বসবাসকারী মানুষ তাদের জীবনে অনেক সফল। এই গ্রামের ৩০ জন সেনাবাহিনীতে, ৩০ জন পুলিশে, ১৭ জন রেলে এবং ৩০ জন চিকিৎসা ক্ষেত্রে তাদের অনন্য গ্রামকে খ্যাতি এনে দিয়েছে। এছাড়া খেলাধুলায় জাতীয় পর্যায়ে পদক পেয়েছেন গ্রামের পাঁচ যুবক।