ছেলের সংসারে ‘বোঝা’ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন বয়সের ভারে বৃদ্ধ বাবা! সেই কারণেই অমানুষের মতন মাঝরাস্তায় অসুস্থ, বয়স্ক বাবাকে একা ফেলে পালাল ছেলে এবং পুত্রবধূ! সোমবার এমনই অমানবিক ঘটনা ঘটল দুর্গাপুরের শ্রীনগর পল্লি এলাকা। অসুস্থ ওই বৃদ্ধকে দেখতে পেয়ে লোকজন পুলিশকে জানালে পুলিশ এসে ওই বৃদ্ধের খোঁজ খবর করলে বৃদ্ধ পুলিশকে বলে, তাঁর নাম মুক্তি আকুঁড়ে। তিনি বাস করেন অণ্ডাল থানার খাসকাজোড়া সীতাপুকুর অঞ্চলে৷ ছেলের নাম সন্তোষ আঁকুড়ে। ছেলে ও বৌমা তাঁকে এইভাবে দুর্গাপুরের শ্রীনগর পল্লির রাস্তায় বসিয়ে দিয়ে গিয়ে আসবে বলে চলে গিয়েছেন অভিযোগ তোলেন তিনি। ঘটনাটি শোনা মাত্র তদন্তে নামে পুলিশ। পুলিশ তরফেই তাকে চিকিৎসার জন্য দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দুর্গাপুরের শ্রীনগর পল্লি এলাকার মানুষজন জানান, এই দিন ভোর ছ’টা নাগাদ ওই বৃদ্ধকে ওই এলাকায় বসিয়ে দিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যান যুবক-যুবতী। অত ভোরে হওয়ায় সেই ভাবে রাস্তায় লোকজন ছিলনা তাই ঘটনাটি সকলের প্রায় নজর এড়িয়ে গেছে। যাঁরা সেই সময় ওখানে ছিলেন তাঁরাও প্রাথমিক ভাবে বিষয়টি কি হচ্ছে তা বুঝে উঠতে পারেননি। এরপর বেলা গড়ালে ওই বৃদ্ধকে ওখানে বসে থাকতে দেখে তার সঙ্গে কথা বলে এলাকার লোকজন। তখন তারা আসল ঘটনা বুঝতে পারেন। বৃদ্ধ জানিয়েছেন, তিনি এক সময় ECL-র কর্মরত ছিলেন। এদিন তাঁর বড় ছেলে সন্তোষ ও তাঁর স্ত্রী ভোরবেলা তাকে বাইকে চাপিয়ে নিয়ে এসে বৃদ্ধ মুক্তি বাবুকে রাস্তায় বসিয়ে দিয়ে চলে যান। এমন অমানবিকতা কেন তার সঙ্গে তার ছেলে ও পুত্রবধূ করলেন, তা তিনি বলতে পারবেন না। তবে ৭০ এর কোঠা পার করা ওই ব্যক্তি যে পুরোপুরি ভাবে সুস্থ নন, তা তাঁর কথাবার্তাতেই বোঝা যায়।
ওই ঘটনা চরম অমানবিকতার স্তম্ভিত এলাকার বাসিন্দারা। তাদের কথা ‘ বয়স হলে অসুস্থ বাবা মা কে ছেলে-বৌমা যদি এভাবে বাড়ি থেকে বের করে দেয়, তাহলে বৃদ্ধ, বৃদ্ধারা কোথায় যাবে! এই বিষয়ে প্রশাসনের কড়া পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’ ওই বৃদ্ধ এর বিষয়ে জানার পর এলাকার মানুষজনই ওই বৃদ্ধকে জল আর খাবার রুটি, আলুভাজা, গুড়, ইত্যাদি দেন। তারপর নিকটবর্তী ফরিদপুর পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই বৃদ্ধের সঙ্গে কথা বলে তাকে চিকিৎসার জন্য দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।