কড়াইয়ে একবার তেল ঢেলে তাতে বার বার নানা তেলেভাজা, শিঙাড়া, পিঁয়াজি, চিকেন পাকোড়া, কাটলেট কত কি ভাজা হচ্ছে? রীতিমত কালো হয়ে যাওয়া সেই তেলে ভাজা অস্বাস্থ্যকর সব খাবার মানুষ জমিয়ে খাচ্ছেনও গোগ্রাসে। এই ধরনের অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসে এই বার আসতে চলেছে রাশ। এক তেলে বারবার খাবার বানানোর দিন শেষ, বড়জোর দু’বার ভাজা যেতে পারে। জনস্বাস্থ্যে সচেতনতায় বিষয়ে এই রাজ্যের সরকার খুব তাড়াতাড়িই আনতে চলেছে এই নিয়ম। এমনকি এই উদ্দেশ্যে পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য দপ্তরের (State Health Department) ফুড সেফটি সেলের সঙ্গে এক সাথে হাত মিলিয়েছে কেন্দ্রীয় খাদ্য সরবরাহ মন্ত্রক।
দু’বারের বেশি ভাজা তেল দোকান থেকে বাজেয়াপ্ত করা হবে। কারণ, বার বার ব্যাবহার করা তেলে কার্বনের পরিমাণ ২৫ শতাংশের বেশি বেড়ে যায়, যা কিনা দেহের পক্ষে ভীষণ ক্ষতিকর। প্রাথমিক ভাবে ৫০ কেজি বা তার বেশি খাওয়ার তেল ব্যাবহারে লাগে রান্নায় তেমন হোটেল, রেস্তোরাঁ ও তেলেভাজার দোকানে কড়া নজরদারি শুরু হচ্ছে। নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া হবে প্রাইভেট সংস্থার হাতে। কোনো হোটেল থেকে বাজেয়াপ্ত তেল বায়ো ডিজেল প্রস্তুতিতে কাজে লাগানো হবে। কিছুদিন কেন্দ্রীয় খাদ্য সরবরাহ মন্ত্রক ভারতের বিভিন্ন রাজ্যগুলিকে জনস্বাস্থ্য উন্নতি বিষয়ক প্রস্তাব পাঠিয়ে রাজ্যের হোটেল, রেস্তরাঁ, বিশেষত তেলেভাজার দোকানে যে ভোজ্য তেল ব্যাবহার হয় তার গুণগত মান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এই বিষয়ে তারা বলেন , অনেক হোটেল, রেস্তোরাঁ, ফাস্টফুড ও তেলেভাজার দোকানের একবার ভাজার তেল ঢেলে তা ক্রমাগত ব্যবহার করা হয়। খাদ্য সুরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী, যখন রান্নার তেল দু’বারের বেশি ব্যবহার করা হলে তখন সেই তেলে কার্বনের মাত্রা বা ‘টোটাল পোলার কম্পোনেন্ট’ প্রচণ্ড মাত্রায় বেড়ে যায়। সেই তেলে রান্না করা খাবার খেলে শারীরিক ক্ষতি অবশ্যম্ভাবী।
রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের ফুড সেফটি সেলের কমিশনার তপনকান্তি রুদ্র এবং অন্যান্য আধিকারিকদের কথায়, “একই তেলে দু’বারের বেশি খাবার ভাজা হলে শরীরের উপর তার প্রভাব ভয়ানক হতে পারে। তাই কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার একসাথে হাত মিলিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, খাবারের দোকানে এমন বার বার ব্যাবহার করা তেল দেখলেই তুলে নেওয়া হবে।” ব্যবসায়ীদের যাতে এই কারণে আর্থিক লোকসানের মুখে না পড়তে হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখার আশ্বাস মিলেছে।