Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
FEATURED ট্রেন্ডিং

দশমীর পরদিন একাদশীতে উত্তরবঙ্গের গ্রামে ফের শুরু হয় দেবীর আরাধনা! কেন জানেন

বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গা পুজো। পূজো শেষে বিসর্জন পর্ব অতিক্রম করে এখন চলছে বিজয়া দশমীর পর্ব। ঘরের মেয়ে উমা মর্ত্যের পূজা শেষে ফিরে গেছে কৈলাসে তার স্বামী গৃহে। তাই বাঙালির মন ভারাক্রান্ত। কিন্তু দশমীর পর দিন একাদশীর থেকে উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকটি জায়গায় শুরু হয়েছে আরেক দেবীর আরাধনা। এই পুজো মুলত মা ভন্ডানি পুজো নামেই খ্যাত। মূলত উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার অন্তর্গত কিছু কিছু গ্রামে ভান্ডানি দেবীর পুজো ঘিরে উৎসব হয় এই সময়। দেবী ভান্ডানিকে অনেকেই অভিহিত করেন দেবী দুর্গার অপর রূপ হিসাবে। উত্তরবঙ্গে এই দেবীর পুজো বনদুর্গা নামেও খ্যাত। তাই উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ বনাঞ্চলের কোথাও কোথাও বনের বস্তিবাসীরা মা ভান্ডানিকে বনদুর্গা হিসাবেও পুজো করে। কিন্তু কেন এই দুর্গা কে বন দুর্গা বলা হয়। কেনই বা মা ভন্ডানি নাম তার। জেনে নিন

এক সময় শুধুমাত্র রাজবংশী সম্প্রদায়ের কৃষকরাই ভান্ডানি পুজোকে কেন্দ্র করে উৎসবে মেতে উঠত। এখন রাজবংশী সম্প্রদায়ের বাইরে পুরো উত্তরবঙ্গের সব গ্রামবাসীরাই তাতে অংশগ্রহণ করে। একাদশী থেকে শুরু হয়ে চারদিন ধরে চলে এই উৎসব।

এই পুজো মুলত লোকগাথার উপর নির্ভর করে হয়। কোনো ধর্মীয় ব্যাখ্যা সেই ভাবে নেই এর। বলা হয় একবার উত্তরবঙ্গে বনাঞ্চলের মধ্যে ক্রন্দনরত দেবীর দেখা পেয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। দেবী নাকি উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চল দিয়ে গ্রাম্যবধূ বেশে কৈলাসে ফিরছিলেন। সেই সময় ছল করে দেবী হারিয়ে যান বনে। তার ক্রন্দনের আওয়াজে ছুটে আসেন রাজবংশী সম্প্রদায়ের আশেপাশের গ্রামবাসীরা। তাদের আতিথ্যে সন্তুষ্ট দেবী পুনরায় কৈলাশ যাওয়ার আগে নিজের আসল পরিচয় দেন এবং সেই সব গ্রামের সর্বদা শস্য পূর্ণ থাকার আশীর্বাদ দিয়ে যান। সেই থেকেই দেবী ভাণ্ডানি তথা বনদুর্গার পুজোর সূচনা।

আরো এক লোকগাথা অনুসারে দশমীর রাতে কৈলাসে ফিরে যাওয়ার পর দুর্গার মন খারাপ ভয়। তিনি আবারও ফিরে আসেন মর্ত্যে। তখন উত্তরবঙ্গে বনে পশু চড়াতে যাওয়া স্থানীয় রাখালদের বাঘ রূপে ভয় দেখান দেবী। আর রাখালরা ভয় পেয়ে দেবীর পুজো করেন। ‘ভণ্ডামি’ করে পুজো নিয়েছিলেন বলে দেবীকে অভিহিত করা হয় ভান্ডানি নামে। দেবী তুষ্ট হয়ে তাদের গ্রামকে শস্য শ্যামলা হওয়ার বর দিয়ে যান।

এই পুজোর সূত্রপাত হয় দশমীর দিনই। ‘যাত্রা পুজো’-র মাধ্যমে। উত্তরবঙ্গের নানা গ্রামে যাতে হেমন্ত ঋতুতে কৃষিকাজ শেষে যাতে ভালো ফসল মেলে সেই উদ্দেশ্যেই কাস্তে, লাঙল, মই প্রভৃতি কৃষিকাজের যন্ত্র পুজোই পরিচিত ‘যাত্রা’ নামে। আর তার পরের দিন থেকেই এখানকার গ্রামে গ্রামে শুরু হয় ভাণ্ডানী দেবীর বন্দনা।

Related posts

কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না তালিবানি আতঙ্ক, ফিরে এসেও আতঙ্কিত সেখানে কাজ করা ভারতীয়রা

News Desk

শরীরে করোনার লক্ষণ কিন্তু তাও রিপোর্ট নেগেটিভ, ফেলে না রেখে সাথে সাথে এই কাজটি করুন।

News Desk

ব্যান্ডেজ খুলে নতুন ব্যান্ডেজ বাঁধতে গিয়ে হাঁ ডাক্তার! এ কি বেরোলো মাথা থেকে

News Desk