কখন কী ভাবে স্নায়ু এবং পেশি কার শরীরে কী রকম প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে, তা আগে থেকে বলা যায় না। আদতে শরীর যন্ত্র বই আর কিছু তো নয়। কাজেই এক-আধটা মডেল তার ব্যতিক্রম হতে পারে বইকি যন্ত্র নিয়ম মেনে চললেও! ব্রিটেনের বার্মিংহামের গ্রেট বারের বাসিন্দা বছর চব্বিশের বেলা কিলমার্টিনের (Bella Kilmartin) ব্যাপারটাও ঠিক তাই! আমি বা আপনি হেসে ফেললে ঘুমিয়ে পড়ি না, কিন্তু বেলা ঘুমিয়ে পড়েন!
সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বেলার এই আশ্চর্য রোগের কথা দ্য মেট্রো সংবাদমাধ্যমের । জানা গিয়েছে যে এক ধরনের স্লিপ ডিজঅর্ডার এটি অত্যন্ত বিরল । পোশাকি ভাষায় নার্কোলেপ্সি (Narcolepsy) এই অসুখের নাম । এই নার্কোলেপ্সি আবার ক্যাটাপ্লেক্সি (Cataplexy) বলে অভিহিত এক ধরনের শারীরিক সমস্যার সঙ্গে যুক্ত। কেউ জোরে হেসে উঠলে এই ক্যাটাপ্লেক্সিতে শরীরের সব পেশি শিথিল হয়ে আসে, ফলে ধীরে ধীরে ঘুমিয়ে পড়েন রোগী, নড়াচড়া করার ক্ষমতা থাকে না।
এই রকমটাই হয় বেলা জানিয়েছেন, এবং যে তাঁর ক্ষেত্রেও ঠিক । এবং যতটা অনুমান করা যায়, ঘটনাটা তার চেয়ে অনেক বেশি বিপজ্জনক। এই অসুখ বেশ কয়েকবার তাঁকে ঠেলে দিয়েছে নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে। কখনও আবার বড়সড় দুর্ঘটনার পরিসর রচনা করেছে। ঈশ্বরের আশীর্বাদেই বলতে গেলে এখনও পর্যন্ত একরকম সুস্থ আছেন বেলা। যেমন, একবার সাঁতার কাটতে কাটতে আপন মনে হেসে উঠেছিলেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে শরীর অসাড় হয়ে যায়, সে বার জলে ডুবে মরতে বসেছিলেন বেলা।
আবার, চা খেতে খেতে হেসে ওঠায় নড়াচড়া করার ক্ষমতা চলে যায়, গায়ে পড়ে গিয়েছিল গরম চা যাতে শরীর পুড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়! বেলা বলছেন, যখন পরিস্থিতির কারনে তিনি স্বতস্ফূর্ত ভাবে হেসে ওঠেন, তখন এই নড়াচড়া না করতে পারার অভিঘাত সব চেয়ে বেশি হয়। এই সব সময়ে তিনি চারপাশের লোকজনের সব কথা শুনতে পান, কিন্তু জিভ নাড়ানোর ক্ষমতাও পর্যন্ত চলে যায়। চোখের পাতাও ধীরে ধীরে বুজে যায়।
কিন্তু বেলার বন্ধুদের সাহায্য বেলাকে স্বাভাবিক জীবনযাপনে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে। লুবরো ইউনিবার্সিটির সাইকোলজির এই ছাত্রীকে সব সময়ে চোখে চোখে রাখেন তার বন্ধুরা।