বিয়ের প্রতি মোহ ভঙ্গ হচ্ছে চীনের জনতার। হ্রাস পেতে পেতে সে দেশে এমনই অবস্থা যে চীনে বিবাহের সংখ্যা গত বছর ৩৬ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমে এসেছে, যা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে জনসংখ্যাগত সংকট সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে চীনের জন্মহারে পরিবর্তন আসবে এবং তা কমে যাবে। পরিসংখ্যান দেখায় যে ২০২১ সালে চীনে ৭৬.৩ মিলিয়ন দম্পতি বিবাহ নিবন্ধন করেছে, যা ১৯৮৬ সালের পর থেকে বেসামরিক বিষয়ক মন্ত্রকের দ্বারা প্রকাশিত সর্বনিম্ন পরিসংখ্যান।
রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র ‘গ্লোবাল টাইমস’ জনসংখ্যা বিষয়ক একজন স্বাধীন বিশেষজ্ঞ হে ইয়াফুকে উদ্ধৃত করে লিখেছেন যে বিবাহ নিবন্ধনের সংখ্যা এইভাবে কমে যাওয়ায় ফলে চীনে জন্মহার হ্রাস পাবে। ন্যাশনাল ব্যুরো অফ স্ট্যাটিস্টিকস (NBS) এর বছরভিত্তিক তুলনামূলক সমীক্ষা দেখায় যে গত বছরে চীনের জনসংখ্যা অর্ধ মিলিয়নেরও কম বৃদ্ধি পেয়েছে। এভাবে টানা এই নিয়ে পঞ্চম বছর যেখানে জন্মহার কমেছে।
২০২১ সালে ৮০ লাখেরও কম দম্পতি বিয়ে করেছেন
পরিসংখ্যান দেখায় যে গত তিন বছরে চীনে বিবাহ নিবন্ধনের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। ২০১৯ সালে, এক কোটিরও কম দম্পতি বিবাহ নিবন্ধন করেছিল, যেখানে ২০২০ সালে এই সংখ্যা ছিল ৯০ লাখের কম এবং 2021 সালে তা পৌঁছয় ৮০ লাখেরও কমে। গ্লোবাল টাইমসের খবর অনুযায়ী, ২০২১ সালে গাঁটছড়া বেঁধেছেন এমন দম্পতির সংখ্যা ২০১৩ সালের পরিসংখ্যানের তুলনায় মাত্র ৫৬.৬ শতাংশ।
বেশিরভাগ দম্পতি ২০১৩ সালে বিয়ে করেছেন
উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০১৩ সালে, গাঁটছড়া বাঁধা দম্পতির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ছিল। এরপর থেকেই তা ক্রমাগত হারে হ্রাস পেয়েছে। চীনের জন্মহার ১৯৭৮ সালের পর থেকে এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। এটি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যখন চীনের সরকারকে জনসংখ্যার সংকট জনিত সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হচ্ছে। গত বছর ‘দ্য গার্ডিয়ান’ তাদের এক প্রতিবেদনে এ দাবি করেছিল। চীনের সরকারি বিভাগ, ন্যাশনাল ব্যুরো অফ স্ট্যাটিস্টিকসের তথ্য উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ২০২০ সালে জন্মহার প্রতি হাজারে ৮.৫ রেকর্ড করা হয়েছে, যা ১৯৭৮ সালের পর থেকে সর্বনিম্ন। এই পরিসংখ্যানগুলি বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশটির উপর জনসংখ্যা ঘটিত সমস্যা এবং এটি ঘিরে অর্থনৈতিক দোলাচল সৃষ্টি করেছে।