পনের টাকা পায়নি বিয়ের পরেও, তাই গৃহবধুকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হল স্বশুরবাড়িতে। ঘটনাটি ঘটেছে নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে, গতকাল অর্থাৎ বুধবারদিন ওই গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
বেশ কিছু মাস আগে ভীমপুরের বাপন মণ্ডলের সাথে কৃষ্ণনগরের বৈকুণ্ঠ সড়কের বাসিন্দা পিঙ্কি শর্মার বিয়ে হয়। পিঙ্কির বাড়ির থেকে অভিযোগ উঠেছে যে ,পিঙ্কির বিয়ের পর থেকেই তাঁদের মেয়েকে নানা ভাবে নির্যাতন করা হত পণের জন্য । কোনও কাজ করতেন না তাদের জামাই। প্রায়শই টাকার জন্য প্রচন্ড চাপ দেওয়া হত পিঙ্কিকে তার শ্বশুড়বাড়ির থেকে। সেই টাকার কারণেই পিঙ্কিকে হত্যা করা হয়েছে বিষ খাইয়ে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পিঙ্কির বাবা তপন শর্মা জানিয়েছেন , পেশায় তিনি দিনমজুর। কিন্তু বিয়ের সময় পিঙ্কির হবু শ্বশুড়বাড়ির কথা মতো পন দিয়েছিলেন নগদ হাজার চল্লিশেক টাকা। তাছাড়াও খাট,আলমারি সহ আরও বেশ কিছু আসবাবপত্র দিয়েছিলেন। তারপরও প্রতিনিয়ত মেয়েকে পরিবারের সাথে মিলে জামাই টাকা চেয়ে অত্যাচার চালাতো। এতো অত্যাচার সহ্য করতে পারেনি মেয়ে, প্রায়ই বাড়িতে সব ঘটনা জানাতো সে। কিন্তু কোনও রকম টাকা পয়সা তার কাছে ছিলনা। সে কথা বহুবার জানানো হয়েছিল মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে। কিন্তু তারা শোনেনি। তবুও মেয়ের কথা ভেবে জামাইয়ের সব দাবি মেনে নিয়েছিলেন। কোনও রকমে ধার দেনা করে টাকা জোগাড় করলেন তিনি। কিন্তু সেই টাকা মেয়ের বাড়ি যাওয়ার আগেই এলো এই দুঃ সংবাদ। তপনবাবু বলেন, ‘‘ওরা শুরুতে জানায় যে পিঙ্কি আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছে বিষ খেয়ে। ভর্তি আছে শক্তিনগর হাসপাতালে। আমি খবর পেয়েই সেখানে ছুটে যাই।’’ পিঙ্কিকে বাঁচানো যায়নি চিকিৎসকদের সর্বোত চেষ্টা সত্ত্বেও।
মেয়েকে হারানোয় শোকাচ্ছন্ন বাবা বলেন, ‘‘সে ভাবে কোনও কাজ করত না জামাই । শুধু আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য মেয়েকে চাপ দিত। বেশ কিছু টাকা দিয়েছি কয়েক কিস্তিতে। কিন্তু তাদের এবার দাবি ছিল, ২০ হাজার টাকা দিতে হবে। সেই টাকাটা পর্যন্ত আমরা জোগাড় করে নিয়েছিলাম। কিন্তু ওরা এভাবে যে মেয়ের মুখে বিষ ঢেলে দেবে তা ভাবতে পারিনি আমি।’’ বলে আবার কেঁদে ফেললেন তিনি।