মৃত্যুর পর যুদ্ধ জয়? এমনটা হয় নাকি? হ্যাঁ হয় কারণ মৃত্যুর পর যুদ্ধ জয়ের নজির গড়েছেন বরেলির হেতরাম পাল। কারণ এই ব্যক্তি নিজের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকার জন্য প্রায় ৩ বছর ধরে আপ্রাণ লড়াই করেছিলেন ২০১৮ সালে অবসর নেওয়ার পর। বিগত দশ মাসে বহুবার এই কারণে প্রতিবাদে বসেও কোনও লাভ হয়নি তার। লড়াইয়ের পাশাপাশি তার স্বাস্থ্যেও অনেক অবনতি হতে থাকে আর এতো খরচ জোগান দিতে পরিবারের অবস্থা কাহিল। মৃত্যুর সাথে লড়তে না পারলেও প্রভিডেন্ট ফান্ডের যুদ্ধে জয়লাভ তার হল শেষমেশ। কর্মকর্তারা পিএফ অ্যাকাউন্ট থেকে তাঁর স্ত্রীর ব্যাঙ্কে ৩ লক্ষ টাকা স্থানান্তর করেন হেতারামকে মৃত ঘোষণা করার কয়েক ঘন্টা পরেই। পরবর্তীতে বাকি ৭ লক্ষ টাকাও দেওয়া হবে, তাঁরা এমন প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন । নিউজ 18 বাংলায় খবরটি প্রকাশিত হয়েছে।
একটি সমবায় মিলে ৬৩ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি কাজ করতেন। তিনি নিজের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকার জন্য অনুরোধ করছিলেন বেশ কয়েক মাস ধরেই। আর্থিক অবস্থার অবনতির কারণে শীঘ্রই টাকার প্রয়োজন এমন কথাও জানিয়েছিলেন তিনি। ফল পাওয়া যায়নি কোনও।
এমন ১০০ জনেরও বেশি কর্মচারী এই মুহূর্তে ওই মিলে কাজ করছেন আছেন যাঁরা একই ভাবে লড়াই করে চলেছেন। ২০১৮ সালে অবসর নিয়েছেন এঁদের প্রত্যেকেই। এতদিন তাঁদের তরফে প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা দেওয়া সম্ভব হয়নি বিশেষ কিছু কারণে এমনটা ওই মিলের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। জন্ম তারিখ নিয়ে হেতারামের ক্ষেত্রে সামান্য কিছু সমস্যা থাকায় এতদিন টাকা আটকে ছিল।
হেতারাম তাঁর সঞ্চয়ের বেশিরভাগই বদাউনের সিভিল লাইনসে একটি বাড়ি কেনার জন্য ব্যয় করেছিলেন অবসর গ্রহণের পরে। তাঁর আশা ছিল যে তাঁকে ভবিষ্যতে সাহায্য করবে পিএফ অ্যাকাউন্টে থাকা সঞ্চিত অর্থ।
হেতারামের পুত্র মহেশের কথা অনুযায়ী , ‘মাসে ২৮,০০০ টাকা আমার বাবা উপার্জন করতেন, অথচ তিনি পিএফ পাননি অবসরের তিন বছর পরেও। কোনও লাভ হয়নি আমাদের আর্থিক দুরবস্থার কথা বার বার জানিয়েও। আমার নিজের চাকরির অবস্থাও এই মুহূর্তে খুব খারাপ। অনেক দিন থেকেই হতাশায় ভুগছিলেন বাবা এই কারণে। শেষে লাভ হয়নি দীর্ঘ দিন ধরে চিকিৎসা করিয়েও।’
মৃত্যুর পর মিল প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন হেতারামের ছেলে এবং পুলিশের কাছে যান এফআইআর দায়ের করার জন্য। অবশেষে হস্তক্ষেপ করে বিষয়টির সুরাহা করেন সার্কেল অফিসার অলোক মিশ্র। তখনই ৩ লক্ষ টাকা স্থানান্তরিত করা হয় হেতারাম বাবুর স্ত্রীয়ের অ্যাকাউন্টে।
মিল কর্তৃপক্ষ থেকে জানিয়েছে, ১২৫ জনের পিএফ ক্লিয়ার করা হয়েছে ২৩৫ অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীর মধ্যে। যথাসময়ে বকেয়া পাওনা বাকিদেরও মিটিয়ে দেওয়া হবে।