এই গ্রামের কারো সাথে বিয়ের সম্বন্ধ করার আগে আঁতকে ওঠে আশেপাশের গ্রামের লোকজন। পারতপক্ষে এখানে আসতে চান না কেউই। কারণটা কি? জানলে অবাক হবেন আপনিও!
বিপ্রশেখর গ্রাম মুর্শিদাবাদ জেলার বড়ঞা ব্লকের একটি প্রত্যন্ত এলাকা। অদ্ভুত ব্যাপার হল এই গ্রামের কোনো বাসিন্দাই কারও সাথে বন্ধুত্ব করতে চান না! এই গ্রামের মধ্যে কোনও ছেলে বা মেয়ে কেউই বিয়ে করতে চায়না! কিন্তু যদি এর আসল কারণ জানা যায় তবে অবাক হয়ে যাবেন! একেবারে বেহাল অবস্থা হওয়ার যাচ্ছে দুর্জয়পলসা গ্রামের প্রধান রাস্তা। তাই , গ্রামের ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়া আসার সময় প্রচন্ড সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, ঘেমে-নেয়ে একাকার অবস্থা! রাস্তা সংস্কারের জন্য অনেক বার জানানো হয়েছে। কিন্তু এই পিছিয়ে পড়া মুর্শিদাবাদ জেলার দুর্জয়পলসাবাসী আজও অপেক্ষায় রাস্তার উন্নয়নের, আপাতত নিত্য যন্ত্রণা নিয়েই দিন কাটাচ্ছেন চরম অসহায় অবস্থায়।
সম্প্রতি এরকম ঝড়বৃষ্টি শুরু হতে না হতেই আরও তীব্র হয়ে দাঁড়িয়েছে গ্রামের সমস্যা। গ্রামে প্রায় হাজার জনের বাস। এতজনের বসবাস থাকলেও এই গ্রামের মানুষের সাথে না কেউ আত্মীয়তা করতে চায়, না এই গ্রামে কেউ আসতে চায়। তাই এখনও পিছিয়ে রয়েছে এই গ্রাম। গ্রামবাসীরা আরও জানিয়েছেন যে ভোটের আগে বা ভোটের সময় জেলা এবং রাজ্য স্তরের নেতারা আসেন প্রতিশ্রুতি দেন কিন্তু সমস্যার সমাধান আর হয়না। তবে ভোটের দিন পর্যন্ত সেসব প্রতিশ্রুতি থাকে। ভোট আসে, ভোট চলে যায়, কিন্তু প্রায় একই রয়ে যায় গ্রামের প্রধান রাস্তাটির বেহাল দশা বছরের পর বছর ধরে।
বর্তমান অবস্থায় , গ্রামের বসবাসকারী এক হাজার পরিবারের মধ্যে গর্ভবতী থেকে শারীরিক অসুস্থ বা অন্য কোনও দুর্ঘটনাগ্রস্ত মানুষকে না কোনও গাড়ি না কোনও অ্যাম্বুলেন্স, নিয়ে যেতে হয় মানুষের কাঁধে করে! সত্যিই তাই , মানুষের কাঁধে চেপেই প্রায় তিন কিলোমিটারের রাস্তা চলে রোগীদের নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। গ্রামে যদি কোনও বিপদ আসে তবে কোনও মোটরগাড়ির প্রবেশ তো অনেক দূরের কথা, গ্রামের রাস্তায় বছর তিনেক ধরে চলে না গরুর গাড়িটুকুও। বর্তমানে এতটাই খারাপ গ্রামে ঢোকার প্রধান রাস্তার অবস্থা যে পার্শ্ববর্তী গ্রামের অধিকাংশ মানুষ এই গ্রামবাসীদের সঙ্গে বিয়ে দিতেও আঁতকে ওঠেন। যদিও বড়ঞা বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহা জানান, এই রাস্তার কাজ অবিলম্বে শুরু করা হবে। গ্রামের এই প্রধান রাস্তা সংস্কার করা হবে। বাস্তবে কবে এই আশ্বাস পরিণত হয় তার আশায় দুর্জয়পলসাবাসী দিন গুণছে।