সারা দুনিয়ায় নতুন করে ত্রাস সৃষ্টি করেছে দক্ষিণ আফ্রিকায় গত নভেম্বর মাসে শনাক্ত হওয়া করোনার নতুন প্রজাতি ওমিক্রণ। সারা পৃথিবী যখন ক্রিসমাস এবং নতুন বছরকে বরণ করে নিতে সারছিল সমস্ত আয়োজন তখন হঠাৎই হাজির হলো অতি সংক্রমক প্রজাতি ওমিক্রন (omicron)। আগের বছর একইভাবে হানা দিয়েছিল আলফা নামের এক ভ্যারিয়েন্ট। আর এই বছর বহুবার নিজের জিনের পরিবর্তন ঘটিয়ে মারাত্মক আকার নিয়ে এসেছে ওমিক্রন। এই কারণে 2022 সাল পড়ার আগেই মিলিয়ে গেছে সারা দুনিয়ার মুখের হাসি, সকলেই ফের আতঙ্কিত। চিন্তিত টিকার কার্যকরিতা নিয়েও।
কিন্তু এরই মধ্যে ওমিক্রণ ভাইরাস কে ঘিরে নতুন কিছু গবেষণা দেখাচ্ছে আশার আলো। এইসব গবেষণা কিছুটা ধারণা করছে এই যে নতুন অতি সংক্রামক প্রজাতির এত সংক্রমণ তা হয়তো মানবজাতির জন্য শাপে বর হতে চলেছে। হয়তো এইভাবে ওমিক্রনের হাত ধরেই শুরু হবে 2020 সাল থেকে চলে আসা করোনা অতিমারির শেষের শুরু। এই সকল সমীক্ষাগুলির দাবি, করোনা বা ওমিক্রন নিয়ে যতটা আতঙ্কে ভুগছে সারা পৃথিবী ততটা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কেননা সময়ের সাথে চরিত্র পরিবর্তন করার পাশাপাশি শক্তি হারাচ্ছে করোনা।
এই বিষয়ে উদাহরণ হিসাবে তারা পৃথিবীতে হানা দেওয়া বাকী মহামারীর প্রসঙ্গ টেনেছে। বলছেন, ১০০ বছর আগে পৃথিবীতে হানা দিয়েছিল এমনই এক কালান্তক মহামারী যার নাম স্প্যানিশ ফ্লু। সারা বিশ্ব কেঁপে গেছিল। বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল কিন্তু সময়ের সাথে সাথে ভয়ঙ্কর সেই স্প্যানিশ ফ্লু-র শক্তি ক্ষয় হয়েছিল। আজ একশো বছর পার করে স্প্যানিশ ফ্লু-র মধ্যে আজ আর আতঙ্কের কিছুই অবশিষ্ট নেই। সেই উদাহরণ টেনে তাঁরা বলছেন, এ ক্ষেত্রে যা হয়েছিল, করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রেও সম্ভবত তাই হতে চলেছে।
বিজ্ঞানীরা করোনার ওমিক্রণের বিষয়ে বলছেন, এই জিন পরিবর্তন আসলে শক্তি হারানো। তাঁরা খুবই আশাবাদী যে, ওমিক্রন ভ্যারিয়্যান্টটি ক্রমশ তার শক্তি খুইয়ে এক অতি সাধারণ সংক্রমণের চেহারা নেবে। কমবে প্রাণহানিও। সবটাই অবশ্য সমীক্ষার থেকে পাওয়া ধারণা। কিন্তু এখনই ঢিলে দেবার কোন জায়গায় নেই। সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে হবে, বজায় রাখতে হবে সামাজিক বিধিনিষেধ মেনে চলা, মাস্ক পরা, স্যানিটাইজার ব্যবহার ইত্যাদি। ভরসা রাখতে হবে টিকাকরণেও।