করোনা ভ্যাকসিন (Corona Vaccine) নিয়ে রাজ্যে নানা বিশৃঙ্খলার খবর ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে। এমনকী, অনেক সময় দেখা গিয়েছে টিকাপ্রেরকদের ভুলে কোনো কোনো ব্যাক্তি প্রথমে কোভিশিল্ডের ডোজ় পেয়েছেন তো, পরের বার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার সময় আরেক সংস্থার তৈরী কোভাক্সিনের ডোজ় পেয়েছেন টিকাপ্রাপক। এমন বহু অনভিপ্রেত ঘটনাই ঘটেছে। কিন্তু, একই দিনে একই ব্যাক্তির শরীরে পরপর তিনবার কোভিশিল্ডের (3 Covishiled Dose on Same Day) প্রথম ডোজের সূঁচ ফোটালেন নার্স! নতুন ভাবে এমনই মারাত্মক অভিযোগের কথা প্রকাশ্যে এসেছে। ঘটনাটি নাগরাকাটার ধূমপাড়ার একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের। টিকা প্রদানকারী নার্সের এমন চূড়ান্ত গাফিলতিতে অবাক সকলেই। অভিযোগ, টিকা দেওয়ার সময় তিনি মোবাইল ফোন কানে কারো সাথে কথা বলে ব্যস্ত থাকায় ভুল করে পরিতোষ রায় নামের এক ব্যক্তিকে তিনবার টিকা দিয়ে দিয়েছেন তিনি! টিকা নেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ভীষণ ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে ওই ব্যাক্তি। তাকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। করোনা টিকা দেওয়া নিয়ে এমন অবহেলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সেখানে।
সূত্র অনুযায়ী, মালবাজার (Malbazar) মহকুমার নাগরাকাটা ব্লকের আঙ্গড়া ভাষা দুই নাম্বার গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা পরিতোষ রায় পেশায় মিস্ত্রি। নাগরাকাটার স্থানীয় ধুমপাড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশের একটি স্কুলের বিল্ডিং এ চলছিল করোনা ভ্যাকসিন ক্যাম্প। প্রথম ডোজের করোনা টিকা নিতে এইদিন সেখানে গিয়েছিলেন পরিতোষ রায় । অভিযোগ, ওই কাম্পে ভ্যাকসিন দিচ্ছিলেন যে নার্স সে ভুল করে পর পর টিকার তিনটি ডোজ দিয়ে পরিতোষ বাবুকে।
পরিতোষ রায় বলেন, কানে মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যাস্ত অবস্থাতেই টিকা দিচ্ছিলেন অভিযুক্ত সেই নার্স। প্রথমবার টিকা দিয়ে দেওয়ার পরেও খেয়াল না করেই তাকে আবারও টিকা দিতে থাকেন ওই নার্স। পর পর তিনবার তাকে যে সূঁচ ফোটানো হচ্ছে তা টের পান পরিতোষ বাবু। অবাক নার্সকে জিজ্ঞাসাও করেন। পরিতোষ বাবুর অভিযোগ, ওঁরা কানেই নিলেন না আমার কথা! যখন আমি জানাই যে আমায় ওনারা তিনবার টিকা দিয়েছেন তখন একটু হতচকিত হয়ে দেখার পর বললেন, ‘পাগলের মতো কথা বলবেন না।’ এরপর আমায় বলেন বাড়ি চলে যেতে। বলে দিলেন, খুব যদি শারীরিক অসুবিধে হয় তাহলে জানাতে, তখন ব্যবস্থা নেবেন।”
এদিকে টিকা নিয়ে বাড়ি গিয়েই অসুস্থ হয়ে পড়েন পরিতোষ বাবু। তাকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় ধূমপাড়ারই একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। পরে তিনি আরও অসুস্থ অনুভব করলে তাকে ভর্তি করা হয় মালবাজার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। বর্তমানে সেখানেই তার চিকিৎসা চলছে। পরিতোষবাবু জানিয়েছেন, “কানে শুনতে অসুবিধে হচ্ছে এছাড়া হাড়ে ভীষণ ব্যথা অনুভূত হচ্ছে।” তবে মালবাজার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সুপার সুরজিত্ সেন জানান, তিনি ওই রোগীকে দেখে এসেছেন। তার হালকা জ্বর রয়েছে। তবে আপাতত বিপদমুক্ত তিনি। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত নার্সকে ডেকে পাঠানো হয়েছে হাসপাতাল থেকে। যদিও এখনও সেই নার্সের কাছ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।